ভারত দেশ হয়ে উঠুক সর্ব ধর্ম সমন্বয়, এটাই তো বরাবর দেশবাসী চেয়ে এসেছেন। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের এক স্কুলে পড়ুয়াদের কলমা শেখানো নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হল। কানপুরের ফ্লোরেটস আন্তর্জাতিক স্কুলের অভিভাবকরা অভিযোগ জানিয়েছেন যে পড়ুয়াদের কলমা শেখানো হচ্ছে স্কুলে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগী রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা সোমবারই স্কুলে যান এ বিষয়ে আলোচনা করতে।
হিন্দু পড়ুয়াদের 'কলমা' শেখানোর অপরাধে ওই বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাফাইতে জানিয়েছেন যে 'সর্ব ধর্ম সম্মান' এই আদর্শকে সামনে রেখে স্কুলের সকালের প্রার্থনায় চারটে ধর্মের শ্লোকই পড়ুয়ারা পাঠ করে। সেখানে যেমন গায়ত্রী মন্ত্র থাকে, তেমনি থাকে গুরুবাণী, ইসলামিক সহ অন্যান্য ধর্মের পবিত্রকথাও থাকেও প্রার্থনায়। প্রায় ১ দশক ধরে এই রীতি চলে আসছে। এই স্কুলের অধ্যক্ষ অঙ্কিতা যাদব বলেন, 'আমাদের প্রার্থনায় চারটে ধর্মের প্রার্থনাই হয়। আমরা আমাদের পড়ুয়াদের এটাই শেখাই যে সব ধর্ম সমান। কিন্তু এখন এটা নিয়েই সমস্যা দেখা দিচ্ছে এবং শনিবার থেকে আমরা এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছি। সোমবার থেকে আমরা ওই ধরনের প্রার্থনা বন্ধ করে দিয়েছি এবং প্রার্থনায় শুধুমাত্র জাতীয় সঙ্গাত গাওয়া হচ্ছে।'
স্কুলের অধ্যক্ষ আরও বলেন, 'আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও খ্রীষ্টান এই চার ধর্মের প্রার্থনা পাঠ করে, এটা ১২-১৩ বছর ধরে চলে আসছে। কেউ এতদিন আপত্তি জানায় নি। চারদিন আগে অভিভাবকদের একাংশ এই নিয়ে আপত্তি তুলেছে।' এ প্রসঙ্গে এক অভিভাবক বলেন, 'আমার ছেলে এখানে পড়ে। কিছুদিন হল আমার ছেলে বাড়িতে কলমা পাঠ করছে। আমার স্ত্রী এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। যখন আমরা আমাদের ছেলের সঙ্গে কথা বলি, সে বলে প্রতিদিন প্রার্থনার পর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এটা তাদের শেখায়। আমার চিন্তার বিষয় হল কেন আমার ছেলে এটা পাঠ করবে। কিছুদিন পর সে যদি তার নিজের ধর্মকে অস্বীকার করে?'
পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে এই বিষয়ের ওপর আরও তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এসিপি নিশাঙ্ক শর্মা এ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা এক টুইটের মাধ্যমে জানতে পারি যে ফ্লোরেটস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ুয়াদের কলমা শেখানো হয়। জেলা শাসক ও স্থানীয় পুলিশকেও বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়। সোমবার আমরা স্কুলে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করি।' এসিপি এও জানান যে অভিভাবকের একাংশ এ নিয়ে অভিযোগ জানানোর পর এখন শুধুমাত্র জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ানো হচ্ছে প্রার্থনায়।