তৃণমূলের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র পেয়েও ব্যর্থ, বিজেপি কি পারবে আন্দোলনকে পূর্ণমাত্রা দিতে

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন ইডির হাতে। পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়। তারপরও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে পারেননি। এখনও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে এক হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে দেখা যায়নি।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার পেয়েও ব্যর্থ

এর আগে সারদা, রোজভ্যালি-কাণ্ডে এবং নারদ মামলায় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-নেত্রীর নাম জড়িয়েছে, তারপরও সেই আন্দোলনকে তৎকালীন প্রধান বিরোধীদল সিপিএম চূড়ান্ত রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। যার ফলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার পেয়েও তা ব্যবহারে অপারগ হওয়ায় ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল। বিজেপি পারেনি নারদ স্ট্রিং অপারেশনকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্নীতির জালে আবদ্ধ করতে।

দুর্নীতির কালো ছায়ার গ্রাসে তৃণমূল

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর একাধিক দুর্নীতির কালো ছায়া গ্রাস করেছিল বাংলার শাসকদলকে। বিরোধীদের ব্যর্থতায় সেই তৃণমূল রাজ্য শাসন করছে অনেক বেশি ক্ষমতা নিয়ে। ২০২১-এও বিজেপির সব পরিকল্পনা একার ক্যারিশ্মায় শেষ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিরাট ক্ষমতা নিয়ে সরকারে এসেও দুর্নীতির কালো ছায়া গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি তৃণমূল।

বিজেপির হাতে হাতিয়ার, পরিকল্পনার অভাব

এখন এসএসসি দুর্নীতিতে তৃণমূল সরকারের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন। বিজেপির হাতে হাতিয়ার তুলে দিয়েছে ইডি। কিন্তু এখনও আন্দোলনের বিস্তার ঘটাতে পারেনি বিজেপি। কলকাতায় কতিপয় মিছিল হয়েছে, সেখানেও বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বকে এক যোগে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি কলকাতার বাইরে এই আন্দোলনকে বৃহত্তর রূপ দিতে।

বিজেপির আন্দোলনে সংঘবদ্ধতার অভাব স্পষ্ট

বিজেপি এখনও পরিকল্পনা করছে এসএসসি ইস্যুতে গোটা রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে। শুধু কলকাতায় সীমাবদ্ধ না থেকে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দুই প্রথম সারির নেতা সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে পর পর দুটি মিছিল সংঘটিত হয়েছে। শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে মিছিলের নেতৃত্ব দেন। আর শনিবার সুকান্ত মজুমদার নেতৃত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুকে। 'দুর্নীতি মুক্ত রাজ্য', 'চোর ধরো জেলে ভরো', 'মমতা গদি ছাড়ো' স্লোগানকে সামনে রেখে বিজেপি আইন অমান্য কর্মসূচি পালন করে।

আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে চাইছে বিজেপি

বিজেপি এই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে চাইছে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে জেলায় জেলায় ব্লকে 'দুর্নীতি মুক্ত রাজ্য', 'চোর ধরো জেলে ভরো', 'মমতা গদি ছাড়ো' কর্মসূচি পালন করতে চাইছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে, এই দাবিতেই বিজেপি আলোড়ন তুলতে চাইছে। এখন দেখার তাঁদের এই পরিকল্পনা তৃণমূলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে ওঠে কি না। নাকি ভোঁতা হয়ে আরও একবার বিজেপির পরিকল্পনা মাঠে মারা যায়?

বদ্ধপরিকর বিজেপি, দেরিতে হলেও আন্দোলনে

আগামী ১ অগাস্ট থেকে বিজেপি রাজ্যের কোনায় কোনায় তৃণমূল-বিরোধী আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে চাইছে। রাজ্যের সমস্ত বুথ, মণ্ডল ও জেলাস্তরে মিছিল-প্রতিবাদ সভা করবে বিজেপি। স্থানীয় সাংগঠনিক নেতৃত্বের পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বেরও একটা অংশ হাজির থাকবেন সেই কর্মসূচিতে। পার্থ-কাণ্ডকে হাতিয়ার করে এবার ঘুরে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। দেরিতে হলেও তাঁরা আন্দোলনে ঝাঁঝ বাড়াতে উঠে পড়ে লাগছে।

More BJP News  

Read more about:
English summary
Could BJP build strong movement against TMC after Partha Chatterjee arrest and SSC corruption revealed?