সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে সংঘর্ষ বিগত কয়েক মাসে অনেকটা বেড়েছে। সে বোরখা কাণ্ড হোক কিংবা জ্ঞানব্যাপি কাণ্ড , অথবা সম্প্রতি নূপুর শর্মার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড়। সব দিক থেকেই একের পর এক সমস্যা দেখেছে দেশবাসী। তবে কেন্দ্রের রিপোর্ট অন্য কথা বলছে। বলা হচ্ছে যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাড়েনি।
২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় সংঘর্ষে গ্রেপ্তার হওয়া ৮,৫৬৫ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ৭৬১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক লোকসভাকে এমনটাই জানিয়েছে। একাধিক প্রশ্নের উত্তরে, মন্ত্রক ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) ডেটা উল্লেখ করেছে এবং বলেছে যে প্রতি বছর সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কোন ক্রমবর্ধমান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, "ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখছে। বছরের পর বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাড়ছে না।"। সরকারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সাংসদ দানিশ আলী। তিনি প্রশ্ন করেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের প্রবণতা বাড়ছে কিনা। তিনি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ প্রদানের জন্য সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
এনসিআরবি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই বছরের মধ্যে ৮৩৫৮ জনকে চার্জশিট করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে দিল্লিতে গ্রেপ্তার, চার্জশিট এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে, কেউ গ্রেপ্তারের হয়নি। যেখানে ২০১৯ সালে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, ২০২০ সালে ৩৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই বছর বিহারে মোট ৪৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মন্ত্রক আরও বলেছে যে সরকার ১ এপ্রিল, ২০০৮ থেকে ২৩ আগস্ট, ২০১৬-এর মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য ৩ লাখ এবং ২৩ আগস্ট, ২০১৬-এর পরে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য ৫ লাখ টাকা করে দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে।
প্রশ্ন উঠছে যে রেকর্ড স্পষ্ট বলছে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের অভিযোগে যুক্ত ব্যক্তিদের বিপুলভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র বলছে এমন কিছু হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা আসলে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের দিকে আঙুল তুলে দেওয়া হচ্ছে। বলতে চাওয়া হচ্ছে মার হয়েছে কিন্তু মারামারি হয়নি। যা ঘটেছে এক পক্ষ থেকে। অপর পক্ষ বসে বসে সহ্য করেছে। তাদের উপরে একটি বিশেষ সম্প্রদায় অত্যাচার চালিয়েছে বলে জানাচ্ছে তারা।