জল্পনার অবসান। ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ হতে চলেছেন স্টিফেন কনস্টানটাইন। সুনীল ছেত্রীদের হেড স্যরের হাতেই লাল হলুদের দায়িত্ব সঁপে দিতে চাইছেন ইমামি কর্তারা। ইতিমধ্যেই চুক্তিপত্র পাঠানো হয়েছে ব্রিটিশ কনস্টানটাইনের কাছে। ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচের কথাবার্তা চলছিল আইএসএলের অন্য দলের সঙ্গেও। তবে তিনি শেষ অবধি আসছেন কলকাতায়। আইএসএলে নতুন চেহারার লাল হলুদকে সাফল্য এনে দিতে।
কলকাতা লিগ ও ডুরান্ডের জন্য ইস্টবেঙ্গলের কোচের দায়িত্ব সামলাবেন বিনো জর্জ। বুধবার তিনি কলকাতায় আসবেন বলে জানা যাচ্ছে। লাল হলুদ ক্লাব সূত্রে খবর, সবকিছু ঠিকঠাক চললে ওইদিনই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ইমামির চুক্তিও স্বাক্ষরিত হবে। কনস্টানস্টাইনের সঙ্গে চেন্নাইয়িন এফসির কথাবার্তা চলছিল। এক প্রশ্নের উত্তরে টুইটে কনস্টানটাইন স্বীকারও করেছিলেন চেন্নাইয়িনে ইন্টারভিউয়ের কথা। কিন্তু শেষ অবধি কথাবার্তা এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গেই। স্টিফেন কনস্টানটাইন একটি মজাদার টুইট রিটুইট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ব্রিটেন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর ও ভারত মহাসাগর দিয়ে একটি লাল রেখা টেনে ভারতে এসে তা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এই পথে কনস্টানটাইন সাঁতরে ভারতে যাবেন কিনা সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। কনস্টানস্টাইন হাসির ইমোজি দিয়ে লেখেন সেই জন্য নিজেকে তৈরি করছি!
🤣🤣🤣🤣 I'm building myself up https://t.co/UZrqib7Xm8
— StephenConstantine (@StephenConstan) July 23, 2022
হাঁটুর চোটে মাত্র ২৬ বছরেই খেলোয়াড়-জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিল স্টিফেন কনস্টানটাইনের। তারপরই বেছে নেন কোচিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাইপ্রাসে কোচিং শুরুর পর বড় দলের দায়িত্ব নেন ১৯৯৯ সালে। তখন থেকে ২০০১ অবধি কনস্টানটাইন নেপালের কোচের দায়িত্ব সামলেছেন। সে দেশে সম্মানিতও হন। ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল অবধি ভারতীয় দলের কোচের পদে ছিলেন। ২০০৫-০৬ মরশুমে তিনি ইংল্যান্ডের মিলওয়ালের প্রথম দলের কোচ হন। ইংল্যান্ডে এএফসি বোর্নমাউথেও কোচের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০০৭ সালে মালাউইয়ের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৮ সালে পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হন সুদানের কোচ। এরপর সাইপ্রাসে এপিইপি, নিয়া সালামিস ফামাগুস্তার কোচের পদেও ছিলেন। ২০১২ থেকে ২০১৩ অবধি এথনিকোস আচনার কোচের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৩ থেকে ২০১৪ অবধি ছিলেন গ্রীসের ক্লাব আপোলোঁ স্মিরনির সহকারী ম্যানেজার। তার আগে জামাইকা জাতীয় দলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ভারতে দ্বিতীয়বার আসার আগে ২০১৪ থেকে ২০১৫ অবধি থিলেন রোয়ান্ডার জাতীয় দলের ম্যানেজার। ২০১৬ সালের আফ্রিকান নেশনস চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের মাটিতে রোয়ান্ডাকে সাফল্য এনে দেওয়ার লক্ষ্যে। তাঁর সময়েই রোয়ান্ডা ফিফা ক্রমতালিকায় সেরা জায়গা ৬৮-তে পৌঁছায়।
ভারতের কোচ হিসেবে তিনি প্রত্যাবর্তন করেন ২০১৫ সালে। ২০১৯ সাল অবধি সেই পদে তিনি বহাল ছিলেন। তাঁর প্রশিক্ষণে ভারত ২০১৬ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৮ সালে ভারত ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপও জেতে ব্রিটিশ কোচের প্রশিক্ষণেই। ২০১৯ সালে এএফসি এশিয়ান কাপ খেলার যোগ্যতাও ভারত অর্জন করে কনস্টানটাইনের কোচিংয়ে। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচেও তাঁর কোচিংয়ে ভারত বেশ কয়েকটি স্মরণীয় ম্যাচ খেলেছে। ২০১৯ সালের এশিয়ান কাপে ভারত জয় দিয়ে শুরু করলেও শেষ অবধি চতুর্থ স্থানে শেষ করে। তারপরই সমালোচনার মুখে কনস্টানটাইন পদত্যাগ করেন। তাঁর প্রশিক্ষণাধীন ভারতীয় দল ফিফা ক্রমতালিকায় ২০১৮ সালে ৯৭ নম্বরে উঠে এসেছিল, যেখানে ২০১৫ সালে ১৭৩-এ ছিল ভারত। অভিজ্ঞ কোচের উপরই তাই আস্থা রাখলেন ইমামি গোষ্ঠীর কর্তারা।