জয় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজে অভিযান শুরু করল ভারত। পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ রানে পরাজিত করল ভারত। শিখর ধাওয়ানের নেতৃত্বে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার ফলে অনেকটা চাপমুক্ত হয়েই রবিবার এই মাঠেই এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ পকেটে পুরে নেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামবে ভারত।
শুক্রবার এই ম্যাচে প্রথমে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে আমন্ত্রণ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। প্রথম ব্যাটিং করার সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি ভারতীয় দল। নির্ধারিত ওভারে ভারত তোলে ৩০৮/৭। অল্পের জন্য এই ম্যাচে শতরান হাতছাড়া করেন রোহিত শর্মা অনুপস্থিতিতে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া শিখর ধাওয়ান। অধিনায়োকচিত ইনিংস খেলা শিখরের ব্যাট থেকে আসে ৯৭ রান। মাত্র তিন রানের জন্য শতরান মিস করেন ধাওয়ান। ভারতীয় ক্রিকেটের গব্বরের ইনিংস সাজানো ছিল ১০টি চার এবং তিনটি ছয় দিয়ে। শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ওপেন করতে শুভমন গিলও খেলেছেন দুর্দান্ত ইনিংস ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মাটিতে। ৬টি চার এবং ২টি ছয়ের সৌজন্যে বড় রানের দিতে এগোন শুভমনের ছন্দ পতন ঘটে শিখরের সঙ্গে বোঝাপড়ায়। সেট এই তরুণ ব্যাটসম্যান রান আউট হয়ে ফিরে যান ডাগআউটে। ব্যক্তিগত ৬৪ রানে আউট হন আগামী দিনে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠার সম্ভবনাময় এই ক্রিকেটার।
অবাঞ্ছিত ভাবে গিলের উইকেট হারাতে হলেও ভারতের রানের গতি কখনও কমেনি। তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা শ্রেয়স আইয়ার পাঁচটি চার এবং দুইটি ছয়ের সৌজন্যে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। এ দিনের ম্যাচে ভারতের রানের অধিকাংশটাই এসেছে টপ অর্ডারে এই তিন ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে
তবে, ব্যাটিং সহায়ক কুইন্স পার্ক ওভালে রান পাননি সূর্যকুমার যাদব, সঞ্জু স্যামসন, দীপক হুডা এবং অক্ষর প্যাটেল। সঞ্জু স্যামসন প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দল বিভিন্ন ক্রিকেটারকে সুযোগ দিয়ে দেখছে। সেখানে সঞ্জুর সুযোগ নষ্ট তাঁর জন্য সমস্যা সৃষ্টি করল। তবে, আরও দুইটি ম্যাচ রয়েছে নিজেকে প্রমাণ করার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন গুদাকেশ মোতি এবং আলজারি জোসেফ।
৩০৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভাল ভাবে করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাই হোপের উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসকে নির্ভরতা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান কাইল মেয়ার্স এবং শামার ব্রুকস। ১০টি চার এবং একটি ছয়ের সৌজন্যে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন মেয়ার্স এবং আউট হওয়ার আগে ব্রুকসের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৭ রানের এই পার্টনারশিপ-ই ম্যাচে ফিরিয়ে আনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যদিও ব্রুকস আউট হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আউট হন মেয়ার্স। দুই সেট ব্যাটসম্যানকে হারালেও সমস্যায় পড়তে হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কারণ ক্যারিবিয়ান দলটির প্রধান ভরসা অধিনায়ক নিকোলাস পুরান তখনও মাঠে নামেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ২৫ রানের বেশি করতে না পারলেও ব্রুকস আউট হওয়ার পর ব্যাটিং করতে নামা ব্রেন্ডন কিং করেন ৫৪ রান। কিং-এর সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসকে লক্ষ্যের দিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন আকিল হোসেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেন্ডন কিং-এর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রোমারিও শেফার্ড এবং আকিল হোসেন সামলালেও তাঁরা জয় এনে দিতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থমকে যায় ৩০৫/৬ রানে।
ভারতের হয়ে এই ম্যাচে দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ সিরাজ, শার্দূল ঠাকুর এবং যুজবেন্দ্র চাহাল।