সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমের বিতর্কের অনুষ্ঠানগুলোর তীব্র সমালোচনা করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা। তিনি বলেন, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বা টেলিভিশন সংবামাধ্যমগুলোর বিতর্কসভায় যে বিচারসভা বসানো হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার কোনও ভিত্তি থাকে না। সেগুলো পক্ষপাতদুষ্ট হয়। নিরপেক্ষভাবে সেখানে কোনও আলোচনা হয় না। সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল বা মিথ্যা অবার আংশিক সত্যের তথ্যের বিচারে আলোচনাসভা হয়।
রাঁচিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি রমনা বলেন, একথা ঠিক বর্তমানে সংবাদমাধ্যগুলো বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বর্তমানে মিডিয়ার ভুল বা ঠিক, ভালো বা খারাপ কিংবা আসল বা নকলের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা নেই। মিডিয়া ট্রায়াল কোনওভাবেই একটি মামলার পথপ্রদর্শক হতে পারে না। যে ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমের চ্যানেলগুলোতে বিচারসভা বসানো হয়, সেখানে নিরপেক্ষভাবে কোনও মন্তব্য পেশ করা হয় না। এই পক্ষপাতদুষ্ট মতামত গণতন্ত্রকে ক্রমাগত দুর্বল করে দিচ্ছে। বিচারব্যবস্থার ক্ষতি করছে। যার প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর।
তিনি সংবাদপত্রের সঙ্গে তুলনা করেন সংবাদ চ্যানেলগুলোর। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা বলেন, এখনও ভুল বা পক্ষপাতমুলক খবর পরিবেশন করলে সংবাদপত্রকে জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু টেলিভিশনে এখন যা দেখাচ্ছে, পরক্ষণে তা মিলিয়ে যাচ্ছে। কোনও জবাবদিহি সেভাবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে করতে হয় না। তিনি মনে করেন, সব থেকে খারাপ সোশ্যাল মিডিয়া। তিনি টেলিভিশন চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়াকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান করেন। তিনি বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর উচিত তাদের আওয়াজ ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে শক্তি জোগানো, শিক্ষিত করা।
বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নুপূর শর্মার নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন দেশের প্রধান বিচারপতি। সেখানেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার ও টেলিভিশন চ্যানেলের সমালোচনা করেন। কিছু দিন আগেই একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ নূপুর শর্মার তুমুল সমালোচনা করে। সারা দেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্ট নূপুর শর্মাকে দায়ী করে। তারপরেই রমনার এই ধরনের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্য। তিনি বলেন, অনেক সময় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিতর্ক সভা বা সোশ্যাল মিডিয়ার খাপের জন্য বিচারপতিরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে পারে না। সেটা বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা মনে করলে ভুল হবে।