লোকমুখে এমনিতেই নেতা মন্ত্রীদের নামে কেউ আজকাল খুব একটা ভালো বলেন না। সবাই মোটামুটি মেনে নিয়েছেন ওই নেতা মন্ত্রী যারা হয় তাঁরা কেউ আর যাই হয়ে যাক না কেন সৎ হন না। কিছু অসৎ কাজ তাঁকে পার্টির স্বার্থে হলেও করতেই হয়। কিন্তু সেই নেতাকেই নাকি ঘোল খাইয়ে দিয়েছিল চার জনের একটি দল। তাঁরা এক বিধায়ককে বলেন যে ১০০ কোটি টাকা তাদের দিলে তাঁরা পাইয়ে দেবেন নব গঠিত মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রিত্ব।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মন্ত্রী পদ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলে একজন বিধায়ককে প্রতারণা করার চেষ্টা করে চার ঠগ। অ্যান্টি এক্সটরশন সেল চার জনের সেই দলকে গ্রেপ্তার করেছে। নবগঠিত মহারাষ্ট্র সরকারে গঠনের ঘটনাবহুল সময়ের মধ্যে এই মামলাটি প্রকাশ্যে এসেছে।
দাউন্ডের বিজেপি বিধায়ক রাহুল কুল পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পরে গ্রেপ্তার করা হয় ওই চার জনকে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে তার ব্যক্তিগত সহকারী ১৬ জুলাই একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন পেয়েছিলেন যিনি নিজেকে রিয়াজ শেখ বলে পরিচয় দেন। রিয়াজ জানান, তিনি একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে কুলের সঙ্গে দেখা করতে চান।
এর পরে, কুল তার সাথে মুম্বইয়ের একটি হোটেলে দেখা করেন যেখানে অভিযুক্ত তাকে বলেছিলেন যে একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ তার কাজ করবেন, তবে তাকে এর জন্য ১০০ কোটি টাকা দিতে হবে। কুল অভিযুক্তের সাথে দর কষাকষি করার চেষ্টা করেছিল যেন সে মন্ত্রিত্ব পাইয়ে দেবেই এবং শেষে ১০০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৯০ কোটি টাকা চূড়ান্ত ডিল হয়েছিল। কিন্তু রিয়াজ অগ্রিম হিসেবে ২০ শতাংশ টাকা দাবি করেন। বিধায়কও ওই টাকা দিতে রাজি হন এবং তাকে পরে ফিরে আসতে বলেন।
কুল কী ঘটছে সে সম্পর্কে দলের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের অবহিত করেছেন এবং মেরিন ড্রাইভ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার বিবেক ফাঁসালকার তদন্তটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং তিনি মামলাটি সিটি ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। সিটি ক্রাইম ব্রাঞ্চ পরে একটি ফাঁদ তৈরি করে এবং অভিযুক্ত এবং তার সহযোগীরা ১৮ কোটি টাকা অগ্রিম আদায় করার জন্য বিধায়কের সাথে দেখা করতে হোটেলে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের তদন্তের জন্য পুলিশ সদর দফতরে নিয়ে আসা হয়।
ধৃত অভিযুক্তরা হলেন রিয়াজ শেখ, যোগেশ কুলকার্নি, সাগর সংঘভি এবং জাফর উসমানি। চারজনকেই ২৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উসমানি গ্যাং ওর মাথা। পুলিশ এই মামলায় দিল্লি-ভিত্তিক ব্যক্তির ভূমিকা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।