চিনের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১২ জন মারা গিয়েছে এবং আরও হাজার হাজার মানুষকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে, রবিবার চিনের জাতীয় গণমাধ্যম এমনটাই জানিয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ানে, মুষলধারে বৃষ্টির জেরে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ছয়জন মারা গিয়েছে এবং আরও ১২ জন নিখোঁজ রয়েছে। চিনের জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সিজিটিএন সূত্রে এমন খবরই মিলেছে।
জানা গিয়েছে যে, শনিবার পর্যন্ত প্রায় ১৩০০ জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গানসুর লংনান শহরে, আরও ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এবং ৩০০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৯৮.৯ মিলিমিটার (৩.৯ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়, যা জুলাইয়ের গড় বৃষ্টির পরিমাণ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ছিল।
পূর্ব ঝেজিয়াং প্রদেশ এবং সাংহাই শহর সহ দেশের কিছু অংশে তাপপ্রবাহের মধ্যে বৃষ্টি হয়েছে, গত সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৭ ফারেনহাইট) পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনা ঘটছে। উষ্ণ বায়ু আরও জল সঞ্চয় করতে পারে, যখন সেটি আর জল ধরে রাখতে পারে না তখন সেটি মেঘ ভেঙে বৃষ্টি হয়। দেশে কোভিড পরিস্থিতি একেই অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে। তার উপরে বন্যা এই পরিস্থিতিকে আরও সমস্যার করে তুলেছে।
এদিকে চিনের প্রতিবেশি দেশ ভারত সেখানে বিভিন্ন স্থানে এই মেঘ ভাঙা বৃষ্টি দেখা দিচ্ছে। এই যেমন হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলার কুমারসেন এলাকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয় শনিবার। গভীর রাতে হয় এই বৃষ্টি। এর জেরে একেবারে তছনছ হয়ে যায় সবকিছু৷ মুষলাধার বৃষ্টির জেরে জল ঢুকে গিয়েছে শিবান এবং শলৌটা পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় সমস্ত বাড়িতে। এলাকার যা রাস্তাঘাট রয়েছে তা ওই মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভেসে বেরিয়ে গিয়েছে৷ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানের কচিংঘটি -শিবান মার্গ৷ বৃষ্টিতে ভেসে চলে গিয়েছে কৃষকদের মাঠ, আপেলের বাগান।
জানা গিয়েহে যে গত রাতে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে পাউছি, নাগজুব্বড় আর শিবানে৷ ২১৭ টি বিদ্যুৎ ট্রান্সফর্মার উপড়ে গিয়েছে, বিদ্যুৎ পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক কারণেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ গত রাত থেকে হওয়া বৃষ্টিতে ৮০ টি সড়কপথ ধুয়ে গিয়েছে। সেই রাস্তা আর রাস্তা নেই। যাঁরা এই মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েছেন তাঁদের ত্রাণের জন্য দাবি করা হয়েছে৷
মৌসম ভবন জানিয়েছে যে, আগামী আরও তিন দিন বৃষ্টি হতে পারে। ২০ জুলাই পর্যন্ত ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে৷ জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা।৮ জুলাই শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে, যার ফলে ১৬ জন মারা যান।