বক্সের বাইরে কাজ
ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে। শাসকদল বিজেপি তাঁর নাম প্রস্তাব করায় ওই পদে তাঁর মনোনয়ন অঙ্কের বিচারে চূড়ান্ত বলাই যায়। একইসঙ্গে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে রাজ্যসভার চেয়ারপার্সনও ওই পদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত। তাঁর মধ্যে দুটি গুণই রয়েছে। তিনি নিজস্ব গণ্ডির বাইরে বেরিয়েও কাজ করতে ভালোবাসেন। তাঁকে একজন নম্রতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
রাজস্থানে জন্ম ধনখড়ের
রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জগদীপ ধনখড়। কৃষক পরিবারে জন্ম, গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা তাঁর। সে অর্থে মাটির কাছাকাছে থেকে তিনি বড় হয়েছেন। রাজস্থান ইউনিভার্সিটি থেকে পদার্থবিদ্যা ও আইনে ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি আইনকে পেশা হিসেবে নেন। এবং রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তারপর। প্রথমে কেন্দ্রীয় রাজনীতি দিয়ে শুরু করলেও পরে তিনি রাজস্থানে রাজ্য রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন সামনেই। সেই আঙ্গিকে জগদীপ ধনখড়ের ভাবমূর্তিকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।
কৃষক পরিবার ও জাঠ ভোট
ধনখড় কৃষক পরিবারের সন্তান। আবার জাঠ। তাই কৃষক ও জাঠ ভোটকে নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে এটা একটা প্রয়াস বলে ভাবা হচ্ছে। রাজস্থান থেকে কংগ্রেসকে এবার ক্ষমতাচ্যুত করতে সর্বপ্রকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। রাজস্থানের ভূমিপুত্র জগদীপ ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা সেই চেষ্টারই অঙ্গ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলার গভর্নর ধনখড়
২০১৯ সালে বাংলার রাজ্যপাল হয়ে এসেছিলেন জগদীপ ধনখড়। প্রথম থেকেই রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে তিনি শিরোনামে থেকেছেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মতপার্থক্য দেখা গিয়েছে। ২০২১ সালের পর ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ছিলেন মমতা বন্যো পাধ্যায়। রাজ্যকে সর্বদা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে রাখতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর এই ভূমিকা নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবও গিয়েছে কেন্দ্রের কাছে। তাঁকে সরাতে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার পর্যন্ত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর পুরস্কার স্বরূপ জগদীপ ধনখড়কে বাংলার রাজ্যপাল পদ থেকে সরিয়ে উপরাষ্ট্রপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
ধনখড় দক্ষ আইনজীবী
তারপর জগদীপ ধনখড় একজন দক্ষ আইনজীবী। সংবিধান নিয়ে তাঁর জ্ঞানকে কুর্নিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। এই অবস্থায় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদও তাঁকে সামলাতে হবে। এই পদে তাঁর মতো দক্ষ লোককে চাইছে বিজেপি। কারণ রাজ্যসভায় ট্রেজারি ও বিরোধী বেঞ্চের শক্তি সমান সমান। তাই সুষ্ঠুভাবে রাজ্যসভা চালনা করার জন্য একজন সুদক্ষ চেয়ারম্যান চাই। সেই কারণে দক্ষ আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশারদ হিসেবে জগদীপ ধনখড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।