যে নাম নিয়ে জল্পনা চরমে পৌঁছেছে বাংলায়
জগদীপ ধনখড় উপ রাষ্ট্রপতি হলে বাংলার রাজ্যপাল পদে তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন? এই প্রশ্নে বিভিন্ন নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে শিশির অধিকারীর নাম। শিশির অধিকারী দীর্ঘদিনের সাংসদ। সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর প্রজ্ঞা সর্বজনবিদিত। তারপর বর্তমানে শুভেন্দু অধিকারী প্রবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী বলে পরিচিত। এই অবস্থায় তাঁর পিতৃদেবকে রাজ্যপাল পদে বসানো মানে, রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হবে।
বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি বাংলার রাজ্যপাল পদে?
তবে শুধু শিশির অধিকারীর নাম নিয়েই যে জল্পনা থেমে আছে, তা নয়। বাংলার পরবর্তী রাজ্যপাল হিসেবে উঠে আসছে বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর নাম। তবে তিনি উপ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর রাজ্যপাল পদে ফিরবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। কেননা জগদীপ ধনখড়কে যখন প্রোমোশান দেওয়া হচ্ছে বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বেঙ্কাইয়া নাইডুর ডিমোশন হবে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।
রাজ্যপাল পদে চমক দেওয়া নাম ২০২৪-এর লক্ষ্যে
তবে আরও একটি নাম নিয়ে চর্চা প্রগাঢ় হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে। তিনি হলেন মুক্তার আব্বাস নাকভি। সম্প্রতি তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। ছেড়েছেন সাংসদ পদ। তারপর দেড় বছর পরেই ২০২৪-এর নির্বাচন। সেদিকে তাকিয়ে এমন একজনকে রাজ্যপাল করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসক দল, যাতে বিশেষ ফায়দা তোলা যায়।
জগদীপ ধনখড়ের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে
সেই কারণেই বাংলার রাজ্যপাল পদে ঘোরাফেরা করছে মুক্তার আব্বাস নাকভির নাম। উত্তরপ্রদেশের শিয়া মুসলিম নেতা তিনি। রাজ্যসভা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে সম্প্রতি ইস্তফা দেওয়ার পর তাঁর নাম নিয়েই উপরাষ্ট্রপতি পদে সবথেকে বেশি জল্পনা চলছিল। এখন জগদীপ ধনখড় সেই পদে মনোনীত হওয়ায় বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে মুক্তার আব্বাস নাকভির নাম উঠে আসছে।
মুসলিমদের মধ্যে বিজেপি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে
বিজেপি সূত্রের খবর অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন মুক্তার আব্বাস নাকভি। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে সতীর্থ রাজনীতিক হিসেবে কুশলী ও বিচক্ষণ। ধনখড় যেভাবে প্রকাশ্যে মমতা বিরোধিতার পথে হাঁটতেন, সেভাবে তিনি নাও হাঁটতে পারেন। আবার পক্ষান্তকে নাকভিকে বিশেষভাবে আক্রমণ করতে পারবেন না মমতা। কারণ রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট। নাকভি সংখ্যালঘু প্রার্থী হওয়ায় মুসলিমদের মধ্যে বিজেপি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেন, এই অঙ্কও কষা হচ্ছে।
সংঘাতের রাস্তা বজায় রাখা, নাকি সমঝোতার পথ
আর কেন্দ্রও চাইছে না প্রথম থেকে রাজ্যপাল নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের পথে যেতে। জগদীপ ধনখড়কে রাজ্যপাল করা থেকেই সংঘাত লেগে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো অনুযায়ী রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্যপালের নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্র। কিন্তু জগদীপ ধনখড়ের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। চূড়ান্ত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হয়। সেই অভিযোগ থেকে শুরু করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত পাঠানো হয়। এই ঘটনার পুনারবৃত্তি হোক চাইবে না কেন্দ্রও। এখন দেখার কেন্দ্রের তরফে সংঘাতের রাস্তা বজায় রাখা হয়, নাকি সমঝোতার পথ প্রশস্ত করা হয় রাজ্যের সঙ্গে।