রাত পোহালেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে অতি সাবধানী বিজেপি। বিজেপি এবার সাবধানতা অবলম্বন করে সমস্ত বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে গেল হোটেলে। রবিবার বিজেপি বিধায়কদের নিউটাউনের একটি হোটেলে রাখা হয়েছে। তাঁরা চাইছেন না কোনও বিধায় হাইজ্যাক হয়ে যান, আর ভোট পড়ুক বিরোধীদের খাতে।
এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি তথা এনডিএ প্রার্থী হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। আর বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হয়েছেন যশবন্ত সিনহা। অঙ্কের বিচারে বিজেপির প্রার্থীর জয় প্রায় নিশ্চিত। তবু বিজেপি কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। তার থেকেও বড় কথা নিজেদের সঙ্ঘবদ্ধ রেখে বিজেপি চাইছে বিরোধীদের মধ্য ভাঙন ধরাতে।
বিধানসভায় বিজেপি ৭৭টি আসনে জিতলেও এখন তাদের সদস্য সংখ্যা ৭০। তার মধ্যে একজনকে আবার তাঁরা বাদের দফায় ফেলে রেখেছেন। কিন্তু ৬৯ জন বিধায়কের ভোট যাতে কংক্রিট থাকে, তার সুবন্দোবস্ত করতেই নিউটাউনের হোটেলে রাখা হয়েছে বিধায়কদের। তবে রাজবনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, বৃথাই এই পদক্ষেপ। বাংলায় এ ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, সে অর্থে নজিরবিহীন পদক্ষেপ বিজেপির।
বাংলায় ভোট কেনা-বেচার সংস্কৃতি এখনও নেই। বাংলার কোনও রাজনৈতিক দল বিধায়কদের নিয়ে কোনও হোটেলে বা রিসর্টে নিয়ে গিয়ে রাখেনি। এটা একান্তই ভিন-রাজ্যের সংস্কৃতি। বিজেপি এই পদক্ষেপ নিয়ে ফের একবার প্রমাণ করল, তারা বঙ্গ সংস্কৃতি ধারাকে বুঝতে বা শিখতে পারেনি আজও। আজও তারা ভিনরাজ্যের সংস্কৃতিকে বাংলায় চাপিয়ে দিতে চাইছে।
ভারতের অন্য রাজ্যে দেখা গিয়েঠছে ঘোড়া কেনাবেচা রুখতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিধায়কদের একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে রেখেছে। নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে বা কুর্সিতে বসতে বিধায়কদের সঙ্ঘবদ্ধ করে রাখার প্রয়াস ছিল এটা। কিন্তু তা এবার বাংলায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খাটাতে চাইছে বিজেপি। এই পদক্ষেপ বাংলরা সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নয় একেবারেই।
'মিসড কলে’ সাড়া মেলেনি, ভরাডুবির পর তথ্য প্রযুক্তির ভরসায় বিজেপি পঞ্চায়েতের ময়দানে
বিজেপির একমতা্র বিধায়ক হিসেবে যিনি অনুপস্থিত ছিলেন, তিনি হলেন অর্জুন-পুত্র পবন সিং। বাবা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর পবন সিং আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ না দিলেও বিজেপি মনে করছে তিনি বাবার সঙ্গেই রয়েছেন। অর্থাৎ তৃণমূলেই রয়েছেন। পবনের ভোট বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিংয়ের দিকেই যাবে বলে মনে করছে তাঁরা। সেজন্য দ্রৌপদী মুর্মুর প্রচার সভাতেও তাঁকে ডাকা হয়নি। কিন্তু এত কিচুর পরও যদি বিজেপির কোনও বিধায়কের ভোট বিরোধী প্রার্থীর দিকে আসে, তা বিজেপির পক্ষে অস্বস্তির হবে। পাল্টা আবার বিজেপির তরফে তৃণমূলের পরিষদীয় দলে ভাঙনের বার্তা দিয়ে রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে সরকার ভাঙার আগে শিবসেনার সাংসদরা ভিনরাজ্যে হোটেল-বন্দি অবস্থায় ছিলেন।