ভারতীয় ফুটবল ফিফার নির্বাসনের মুখে পড়বে কিনা সেটা নিয়েই এখন চলছে নানা জল্পনা। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে এআইএফএফে শীর্ষ আদালত নিযুক্ত তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীকে। ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট যদি এআইএফএফের খসড়া সংবিধানকেই সবুজ সঙ্কেত দেয় তাহলে নির্বাসন এড়ানোর যথেষ্ট সময় থাকবে। সমস্যা বিলম্ব হলেই।
ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে খসড়া সংবিধান গতকাল জমা দেওয়া হয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্রশাসকমণ্ডলীর তরফে। গত ২৩ জুন ভারতীয় ফুটবলের বাস্তবিক চিত্র খতিয়ে দেখতে এসে ফিফা ও এএফসির যৌথ দল সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, ফেডারেশনের সংবিধান ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত করতে হবে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেডারেশনে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তা না হলেই ফিফার নির্বাসনের মুখে পড়বে ভারত। যার ফলে অক্টোবরের ১১ থেকে ৩০ তারিখ অবধি এ দেশে অনুষ্ঠেয় ফিফা মহিলা অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বও হাতছাড়া হবে ভারতের।
সুপ্রিম কোর্ট যদি এআইএফএফের খসড়া সংবিধানে যদি সবুজ সঙ্কেত দেয় তাহলে সাতদিনের মধ্যে স্পেশ্যাল জেনারেল বডি মিটিং ডেকে সেই সংবিধানকে চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। নতুন সংবিধানকে যেদিন এআইএফএফের জেনারেল বডি অনুমোদন দেবে তার ৩০ দিনের মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে নির্বাচন। সবকিছু যদি তেমনভাবেই এগোয় তাহলে শাস্তির কোপ এড়াতে পারবে ভারতীয় ফুটবল। গত ১৮ মে এআইএফএফে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করে শীর্ষ আদালত। তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অনিল আর দাভে, প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ড. এস ওয়াই কুরেশি এবং প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়। জাতীয় ক্রীড়া নীতিকে মেনে নতুন সংবিধান তৈরি থেকে ফেডারেশনের নির্বাচন করানোর ভার এই প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে ন্যস্ত হয়। তিন দিন আগে খসড়া সংবিধানের কপি ফিফার কাছেও পাঠানো হয়েছে।
কুরেশি জানান, দেশের ক্রীড়া নীতিকে মেনেই নতুন সংবিধান তৈরি করা হয়েছে যাতে ফেডারেশন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে এবং ফিফা ও এফএফসির সদস্য সংস্থা হিসেবেই যাবতীয় কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। উল্লেখ্য, প্রশাসকমণ্ডলী ফুটবলপ্রেমীদের বিভিন্ন সুপারিশ খতিয়ে দেখেও এই খসড়া সংবিধান তৈরি করেছে। বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার কাছেও তা পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, যে লিগে এআইএফএফের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং ফেডারেশন পরিচালনা করে তাকেই দেশের সেরা লিগের তকমা দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে খসড়া সংবিধানে। সেটা হলে, আইএসএলকে পিছনে ফেলে দেশের সর্বোচ্চ লিগের তকমা ফেরত পাবে আই লিগ, যাতে অবনমন প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রশাসকমণ্ডলীর সঙ্গে বৈঠকে বেশিরভাগ ক্লাবই আইএসএলকেই দেশের সেরা লিগ হিসেবে দেখতে চায়, আইএসএলে অবনমন চালুর কথাও বলা হয়েছিল। যদিও দুটি ক্লাব চাইছে আই লিগই সেরা লিগ হিসেবে বিবেচিত হোক। জল কোন দিকে গড়়ায় সেদিকেই তাই সকলের নজর।