দুই দিনের ইজরায়েল সফর শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার সৌদি আরব পৌঁচেছেন। সেখানে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমনের অস্বস্তি বেশ খানিকটা বাড়িয়ে বাইডেন সাংবাদিক খাশোগির মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। খাশোগি হত্যার নেপথ্যে সৌদি যুবরাজ ছিলেন বলে জো বাইডেন মনে করতেন।
সৌদি সফর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেদ্দায় ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে বৈঠক করেন। কয়েক ঘণ্টা বৈঠকের পরেই বাইডেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি বলেন, 'আমি সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। মানবাধিকার ইস্যুতে নীরব থাকা আমায় মানায় না। মার্কিন ভিত্তিক সৌদি সাংবাদিককে হত্যার ঘটনায় আমি কী ভেবেছিলাম, তা সরাসরি তাঁকে জানিয়েছি। বর্তমানে এই বিষয়ে কী ভাবছি তা স্পষ্ট করে দিয়েছি। আমি সব সময় মানবিকতা ও মূল্যবোধের পক্ষে সওয়াল করি। বিপক্ষে যেই থাকুন না কেন।'=' তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি প্রিন্স তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন। সৌদি প্রিন্স তাঁকে জানিয়েছেন, খাশোগি হত্যার জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে দায়ী নন। সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, 'আমি মনে করতাম, সৌদি প্রিন্সই ইস্তানবুলে সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তিনি আমাকে বলেছেন, খাশোগিকে হত্যার নেপথ্যে তাঁর ভূমিকা ছিল না। যাঁরা এর জন্য দায়ী, তাঁদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।'
সৌদি আরবের বংশোদ্ভূত জামাল খাশোগি মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ছিলেন। জামাল খাশোগি সৌদি রাজ পরিবারের তীব্র সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে তিনি প্রবেশ করলেও আর বাইরে আসেননি। তিনি কনস্যুলেটের অভ্যন্তরে গুপ্তহত্যার শিকার হন বলে অভিযোগ। তাঁর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের নাম। তুরস্কের পাশাপাশি ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি সরকার মনে করে সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও একই দাবি জানিয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের তেল সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সৌদি আরব বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেল সরবরাহ বাড়াবে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে অপরিশোধিত তেলের দাম হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। সৌদি আরব তেলের দাম বাড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিশর, জর্ডান ও ইরাকের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবারের জন্য মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসেন জো বাইডেন। প্রথমে তিনি ইজরায়েলে যান। সেখান থেকে শুক্রবার তিনি সৌদি আরবে পৌঁছন। ১৬ জুলাই শনিবারই তাঁর মধ্যপ্রাচ্য সফরের শেষ দিন বলে জানা গিয়েছে।