ভারত ঐক্যবদ্ধ করতে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত পদযাত্রা করবে কংগ্রেস। রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে এমনই প্রস্তাব পেশ হওয়ার পর তা সাদরে গৃহীত হয়েছে বলেই খবর। এবং এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে রাহুল গান্ধীর একপ্রকার পুনর্ভিষেক হতে চলেছে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটারের সুদীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে যাত্রা করবেন কংগ্রেস নেতারা। যার নেতৃত্বে থাকবেন রাহুল গান্ধী। এবং এর জন্য সময় লাগবে ১৪৮ দিন।
আগামী অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা রয়েছে। এবং এই পথযাত্রা অক্টোবরের ২ তারিখ শুরু হওয়ার কথা ছিল কন্যাকুমারী থেকে। তবে শোনা যাচ্ছে, এই পদযাত্রার দিন আগিয়ে আনা হবে। কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং এবং জয়রাম রমেশ সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, যেভাবে দেশের গণতন্ত্র এবং সংবিধানে বিজেপি বারবার আঘাত হেনেছে তার বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সচেতন করতে কংগ্রেস তরফে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
যদিও বিশেষজ্ঞরা এর পিছনে দুটি কারণকেই প্রধান বলে মনে করছেন। প্রথমত, এই পদযাত্রার নেতৃত্বে থাকবেন রাহুল গান্ধী এবং তাঁর এই নেতৃত্বদানের মধ্য দিয়েই আগামী দিনে ফের একবার তিনিই যে কংগ্রেসকে কাঁধে করে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এবং দ্বিতীয়ত, ১৪৮ দিনের এই পদযাত্রা আগে শুরু করার অন্যতম কারণ হল- এই বছরের শেষের দিকে গুজরাত এবং হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে, বিজেপি বিরোধী পদযাত্রা শেষ হলে কংগ্রেস নতুন করে অক্সিজেন পাবে।
সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটারের পদযাত্রা ১২টি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে গিয়ে শেষ হবে। প্রত্যেকটি রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা এবং জাতীয় স্তরের নেতৃত্ব এই পদযাত্রায় অংশ নেবেন। এবং সর্বোপরি এই পদযাত্রার নেতৃত্বে থাকবেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিদিন ২৫ কিলোমিটার করে ১৪৮ দিনে মোট সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা করা হবে। যদিও কিছু কংগ্রেস নেতা দিন বাড়িয়ে এবং দিন প্রতি কিলোমিটার কমিয়ে দেওয়ার আর্জি পেশ করেছেন।
এই পদযাত্রায় বিভিন্ন রাজ্যে চলতে চলতে রাহুল গান্ধী বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, যুব সমাজের নানা সমস্যা, কৃষক সমস্যা, মহিলাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরবেন।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের পর দলের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন রাহুল গান্ধী। তবে তারপর থেকে দলের মধ্যে চূড়ান্ত অস্থিরতা চলেছে। এখনও পর্যন্ত দল পাকাপাকিভাবে কাউকে সভাপতি বেছে নিতে পারেনি। কংগ্রেস একটু বড় অংশ রাহুল গান্ধীকেই ফের একবার দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে চাইছে।
কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্তই পথযাত্রায় সমস্ত সমমনস্ক দলকে শামিল হওয়ার আবেদন জানিয়েছে কংগ্রেস। এখন দেখার কারা কারা কংগ্রেসেরই পদযাত্রায় পা মেলান।