কিকবক্সিংয়ের রিংয়েই যে মারণফাঁদ লুকিয়ে তা জানতেন না। বেঙ্গালুরুর জ্ঞানজ্যোতি নগরের পাই ইন্টারন্যাশনাল বিল্ডিংয়ে আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্যস্তরীয় কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ। মাইসুরুর ২৩ বছরের কিকবক্সার নিখিল এস ম্যাচ চলাকালীন রিংয়ের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। তারপর থেকে জ্ঞান ফেরেনি। গতকাল মারা যান নিখিল।
খেলোয়াড়দের সুরক্ষার জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থা থাকলে নিখিলকে বাঁচানো যেত বলে মনে করেন অনেকেই। সুরেশের পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে কোচ নবীন রবিশঙ্কর ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযোগ, এই প্রতিযোগিতা যেখানে হচ্ছিল সেখানে আপদকালীন চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না। ছিলেন না কোনও চিকিৎসক, ছিল না অক্সিজেন, স্ট্রেচার বা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও। ঘটনাটি ঘটেছে ১০ জুলাই। নিখিল রিংয়ের মধ্যেই লুটিয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর তাঁকে নগরভাবীর জিএম হাসতাপালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে যশবন্তপুরের মনিপাল হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু বাঁচানো যায়নি।
নিখিলের বাবা সুরেশ মাইসুরুর একটি বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী। অভিযোগপত্রে তিনি জানান, পাই ইন্টারন্যাশনাল বিল্ডিংয়ের ফিফথ ফ্লোরে কিকবক্সিং প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করেছিল র্যাপিড ফিটনেস জিম নামের একটি সংস্থা। সেখানেই নিখিল অংশ নিয়েছিলেন। ১০ জুলাই নিখিলের পরিবারের কাছে ফোন যায়, তাঁর বাবাই ফোনটি ধরেছিলেন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। বলা হয়, নিখিল প্রতিযোগিতা চলাকালীন চোট পেয়েছেন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। নিখিলের বাবা সুরেশের দাবি, যেখানে প্রতিযোগিতাটি হচ্ছিল সেখানে চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থা থাকলেই এই অঘটন এড়াতো যেত। নিখিল প্রতিপক্ষের পাঞ্চেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্পঞ্জের সরু ম্যাট থাকায় তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লাগে। অচেতন নিখিলকে এরপর গ্রাউন্ড ফ্লোরে নিয়ে এসে একজনের ব্যক্তিগত গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা মূল আয়োজক। তাঁর ফোনও বন্ধ। গ্রেফতারি এড়াতে ওই আয়োজক গা ঢাকা দিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। গতকালই মাইসুরুতে নিখিলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। নিখিলের বাবা সুরেশ নিজেও মার্শাল আর্টে পারদর্শী এবং কোচিং করান। নিখিল মাইসুরুর বিক্রম মার্শাল আর্টস আকাদেমিতে প্রশিক্ষণ নিতেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতও ছিলেন অকালপ্রয়াত এই কিকবক্সার।