ললিত মোদী ভারত সরকারকে ঘোল খাওয়ালেও বোল্ড সুস্মিতায়! মায়ের বান্ধবীকে বিয়ে করাতেও ছিল চমক

ললিত মোদী আজ চমকপ্রদ ঘোষণা করেছেন। শুরু করতে চলেছেন নতুন জীবন। মালদ্বীপে সুস্মিতা সেনের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন লন্ডনে। ললিত খোলামেলা জানিয়েছেন, সুস্মিতার সঙ্গে ডেট করছেন। শীঘ্রই করবেন বিয়ে। এখনও তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ডে জ্বলজ্বল করে সেই লেখাটি ফাউন্ডার অব আইপিএল। আইপিএলের প্রতিষ্ঠাতা এখন ঘোল খাওয়াচ্ছেন ভারত সরকারকেই। যদিও বঙ্গতনয়ায় বোল্ড হলেন তিনি।

প্রথম বিয়ে

ললিত মোদীর প্রথম স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রয়াত হন। এই মিনালকে বিয়ে করার ঘটনাটিও কম চমকপ্রদ ছিল না। মিনাল ললিতের থেকে ৯ বছরের বড় ছিলেন। এমনটাও জানা যায়, মিনাল ললিত মোদীর মায়ের বান্ধবী ছিলেন। নাইজেরিয়ার সিন্ধি ব্যবসায়ী জ্যাক সাগরানির সঙ্গে মিনালের বিয়ে হলেও টেকেনি। এই দম্পতির এক কন্যাসন্তানও ছিল, নাম করিমা। ললিতের সঙ্গে মিনালের কথা জানতে পেরেই আপত্তি জানায় পরিবার। যদিও ঠাকুমা দয়াবতী মোদীকে রাজি করিয়ে শেষ অবধি ১৯৯১ সালের ১৭ অক্টোবর ললিত মিনালকে বিয়ে করেন। তবে দিল্লিতে মিনাল অস্বস্তিতে পড়ায় তাঁকে ও করিমাকে নিয়ে মুম্বই চলে যান ললিত। ললিত-মিনালের পুত্র রুচির ও কন্যা আলিয়া। মুম্বইয়ে পেডার রোডের ফ্ল্যাটে প্রথমে থাকতেন ললিতরা। পরে তাঁরা জুহুতে মিনালের বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। আজ ললিতের পোস্টে দেখা গিয়েছে এক ফ্রেমে ললিত, মিনাল ও সুস্মিতাকে।

প্রভাবশালী হয়ে ওঠা

বন্ধু বসুন্ধরা রাজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ললিতের প্রভাব বাড়তে শুরু করে। ২০০৫ সালে বসুন্ধরা রাজেকে দিয়ে রাজস্থানের ক্রীড়ানীতি পাস করিয়ে রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে বসার রাস্তা প্রশস্ত করে নেন ললিত। কিশোর রুংতাকে ১ ভোটে হারিয়ে আরসিএ সভাপতি হন। জয়পুরের সওয়াই মান সিং স্টেডিয়ামের সংস্কার-সহ ক্রিকেট পরিকাঠামোর উন্নতির বেশ কিছু কাজ করেন। আরসিএ সভাপতি হওয়ার পর বিসিসিআইয়ের নির্বাচনে জগমোহন ডালমিয়াকে হারাতে শরদ পওয়ারকে সহযোগিতা করেছিলেন মোদী। বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্টও হন। ২০০৫ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে বিসিসিআইয়ের রাজস্ব উল্লেখযোগ্য বাড়ানোর পিছনেও অবদান ছিল ললিতের। ২০০৮ সালে শুরু হয় তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত আইপিএল। রাজস্থানের রাজনীতিতেও তিনি প্রভাব খাটাতে শুরু করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে রাজে হারতেই কঠিন পিচে পড়ে যান ললিত মোদী।

শেষের শুরু

২০০৯ সালে আইপিএলে দুটি নতুন দল নেওয়ার প্রক্রিয়া ললিত মোদীকে ক্রমেই আইনি জটিলতার পথে এগিয়ে দেয়। এরই মধ্যে এন শ্রীনিবাসনের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। ক্রমেই রাশ আলগা হতে থাকে ললিতের। ২০১০ সালে কোচি ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে ললিত মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে বিসিসিআইয়ে। বিড রিগিং, গভর্নিং কাউন্সিলকে অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া-সহ ২২টি অভিযোগ এনে ললিত মোদীকে সাসপেন্ড করে বিসিসিআই। ললিত মোদী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে গড়াপেটার অভিযোগ তোলেনষ এরই মধ্যে মোদী ও বিসিসিআইয়ের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর। ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগও ওঠে মোদীর বিরুদ্ধে। আইনি জটিলতার মধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ললিত মোদী। ক্রিস কেয়ার্নসের বিরুদ্ধেও ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ এনেছিলেন ললিত মোদী।

বোর্ডের নির্বাসনের পর বহাল তবিয়তে

২০১৩ সালে আটটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ললিত মোদীকে আজীবন নির্বাসনে পাঠায় বিসিসিআই। ২০১৪ সালে লন্ডনে থেকেই আরসিএর সভাপতি পদে নির্বাচিতও হন ললিত মোদী। কংগ্রেস নেতৃত্ব মোদীকে আইনি জালে জড়ানোর চেষ্টা করতে থাকলেও মোদীকে বিজেপি নেতৃত্ব সহযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ। ললিত মোদীর অন্যতম আইনজীবী ছিলেন সুষমা স্বরাজের কন্যা বাঁসুরি। সুষমা স্বরাজও ললিত মোদীকে বিদেশে থাকাকালীন অনেক সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করে দেন অভিযোগ। ললিতের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। ইডি ইন্টারপোলের কাছে আর্জি জানায় ললিত মোদীকে ভারতে প্রত্যর্পণের জন্য। কিন্তু ২০১৭ সালে অনেক টালবাহানার পর সেই আর্জি খারিজ করে দেয় ইন্টারপোল। যা স্বস্তি দেয় ললিত মোদীকে। ভারত সরকারকে ঘোল খাইয়ে বহাল তবিয়তে লন্ডনে থেকে এবার সেই ললিতই নতুন ইনিংস শুরুর পথে।

(প্রচ্ছদের ছবি- ললিত মোদীর টুইটার)

More LALIT MODI News  

Read more about:
English summary
Lalit Modi, Founder Of IPL, Now In London To Marry Sushmita Sen After Getting Relief From Interpol. He Has Married Minal Sagrani, Nine Years Older Than Lalit.
Story first published: Thursday, July 14, 2022, 22:32 [IST]