দেশে ধর্ষণের ঘটনার পাশাপাশি যৌন হেনস্থাও বেড়ে চলেছে। কিন্তু এর জন্য নাকি মহিলাদের পোশাকই দায়ী আর তা মনে করছেন খোদ মেয়েদের অভিভাবকরাই। সরকার নিয়োজিত এক প্যানেলের সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল। সেই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে কমপক্ষে ৩৪ শতাংশ অভিভাবক মনে করেন যে যৌন হেনস্থার পিছনে প্রধান কারণ হল মেয়েদের স্বভাব ও তাদের পোশাক পরার স্টাইল।
সমীক্ষায় এও দেখা গিয়েছে দেশের ৩৫ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এমনটাই মনোভাব রাখেন। এই কমিটি সরকারের কাছে জমা দেওয়া জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) সংক্রান্ত এক তথ্যে বলেছে, 'এটি সমাজের সেই ধারণাকে প্রতিফলন করে যেখানে নারীরা তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া হয়রানির জন্য দায়ী।' ম্যাঙ্গালুরু-ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স পরামর্শদাতার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি লিঙ্গ শিক্ষার বিষয়ে সুপারিশ করেছে।
এই 'ডিপ-স্টিক' সমীক্ষায় ১,০৭০ জন শিক্ষক, ৪০৪ জন অভিভাবক ও ২২১ ডন পড়ুয়াদের ২০টি প্রশ্ন করা হয়। সমীক্ষা বলছে, 'যদিও এটি একটি গভীর অধ্যয়ন নয়, তবে এটি নারী-পুরুষ সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি নিয়ে মানুষের নাড়ি বুঝতে সাহায্য করেছে এবং লিঙ্গ শিক্ষার জন্য সুপারিশগুলি প্রণয়নে কিছু অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছে।' তবে সমীক্ষায় এও উঠে এসেছে যে কিছু অভিভাবক এও মনে করেন, যে কোনও লিঙ্গের ব্যক্তিকে যৌন হয়রানি করা যেতে পারে এবং অধিকাংশ অভিভাবকই মনে করছেন যে মেয়েদের তাদের পছন্দের পোশাক পরার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
সমীক্ষায় কিছু এমন প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যাতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা লিঙ্গ ভেদাভেদ বা একটু অন্য ধরনের ভাবনা চিন্তা করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে শিক্ষকদের মধ্যে কী ধরনের দায়িত্ব ও ভূমিকা বন্টন করা উচিত, লিঙ্গ-নির্দিষ্ট পেশা,মেয়ে এবং ছেলেদের অংশগ্রহণ এবং তাদের শিক্ষাগত অর্জন। তবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে ছকে বাঁধা নিয়ম ভেঙে অন্যভাবে চিন্তা করতে শুরু করেছে এটা ভালো বিষয়। শিক্ষকদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ মনে করেন যে বিকেল ৫টার পর বিশেষ ক্লাস রাখা মেয়েদের জন্য উচিত নয়। শিক্ষকরা মনে করছেন যে ছাত্রীরা সঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছে গেলেই ভালো।