সংশোধনাগার ভরে উঠছে। যারা কোনও অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন তারা ছাড়াও পাচ্ছেন না সহজে। ফলে সমস্যা বাড়ছে প্রত্যেক দিন। তাই সুপ্রিম কোর্ট জামিন পাওয়ার জন্য কেন্দ্রকে সংশোধিত আইন আনতে বলেছে। বিচারপতি এস.কে. কৌল এবং এম.এম. সুন্দরেশ বলেছেন যে ভারতে কারাগারগুলি উপচে পড়ছে, অথচ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার অত্যন্ত কম ছিল। সেই জন্যই সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে যে জামিন আইনে সরলীকরণ প্রয়োজন রয়েছে। তাই একটি সংশোধিত আইনের সুপারিশ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
জামিন সহজ করার জন্য কেন্দ্রকে একটি নতুন সংশোধিত আইন আনার সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার পর্যবেক্ষণ করে বলেছে যে, তদন্তকারী সংস্থাগুলি এমন একটি মানসিকতা দেখাচ্ছে যা ব্যক্তি স্বাধীনতার সুরক্ষার পরিবর্তে আইনের সাহায্য নিয়ে গ্রেফতারিতে বিশেষ উদ্যোগী হয়ে রয়েছে।
বিচারপতি সুন্দ্রেশ পর্যবেক্ষণ করেছেন, "ভারতের কারাগারগুলি বিচারাধীন বন্দিতে ভরতি হয়ে গিয়েছে। আমাদের সামনে রাখা পরিসংখ্যান থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে যে কারাগারের বন্দিদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি বিচারাধীন বন্দি। এই শ্রেণীর বন্দীদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠকে গ্রেপ্তার করার প্রয়োজনও নাও হতে পারে।"
এই বিচারাধীন বন্দীদের মধ্যে অনেকেই অশিক্ষিত, দরিদ্র এমনকি নারীও। তাদের সামাজিক পরিস্থিতি তাদেরকে অপরাধ করতে বাধ্য করেছে। এর সাথে যোগ হয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে গ্রেফতারের ক্ষমতা কম ব্যবহার করতে ব্যর্থ হওয়া।
আদালত কেন্দ্রকে জামিনের পাওয়ার জন্য একটি পৃথক এবং সংশোধিত আইন আনার কথা বিবেচনা করতে বলেছে, বিশেষত কোর্ট একটি সহজ পদ্ধতি ভাবতে বলেছে যাতে জামিন দেওয়া যায় সহজেই।বেঞ্চ রায়ে বলেছে, "ভারত সরকার একটি জামিন আইনের প্রকৃতিতে একটি পৃথক আইন প্রবর্তনের কথা বিবেচনা করতে পারে যাতে জামিন মঞ্জুর করা যায় সহজে।"
আদালত ব্রিটেনের বেইল অ্যাক্টের উল্লেখ করেছে যা কারাগারে বন্দীদের প্রতি মানবিকতার প্রকৃত উদাহরণ ছিল। আদালত সরকারকে ফৌজদারি কার্যবিধির উপর পুনর্বিবেচনা করতে বলেছে। আদালত বলেছে যে, "আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে ভারত সরকার সঠিক পরামর্শ আদালতের সামনে পেশ করবে।"
বর্তমানে একজন প্রধান বিচারপতি এবং ত্রিশ জন অন্যান্য বিচারপতি নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট গঠিত। প্রয়োজনে অস্থায়ী বিচারপতি নিয়োগের ব্যবস্থা সংবিধানে রয়েছে(ধারা নং-১২৭)।এছাড়া প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির সম্মতি সাপেক্ষে কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সাময়িক কালের জন্য বিচারক হিসেবে মনোনীত করতে পারেন (ধারা নং ১২৮)। সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি পদপ্রার্থীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। তাঁকে ভারতের কোনো হাইকোর্টে ৫ বছর বিচারপতিরূপে অভিজ্ঞ থাকতে হবে অথবা কোনো হাইকোর্টে ১৫ বছরের অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। বিচারপতিগণ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্বপদে অধিষ্ঠিত ও বহাল থাকেন।