ত্রিপুরার জামানত হারিয়েও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে চায় না তৃণমূল। বরং নতুন উদ্যমে নেতা-কর্নীদের চাঙ্গা করে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচন জিততে চায় তারা। উপনির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হলেও সুনির্দিষ্ট লক্ষ নিয়েই ত্রিপুরায় তৃণমূল এগোতে চাইছে। যদিও বিজেপি-সহ রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত, ভস্মে ঘি ঢালছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সোমবার ত্রিপুরায় নতুন দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেছে তৃণমূল। ত্রিপুরার রাজধানীতে তৃণমূল গড়ে তুলেছে তাদের হেড কোয়ার্টার। এখান থেকে ত্রিপুরা বিজয়ের পরিকল্পনা রচনা করবেন তৃণমূলের নেতারা। তৃণমূল জামানাত বাজেয়াপ্তের পরও যেভাবে ঘূঁটি সাজাতে তৎপর হয়েছে হাত গুটিয়ে বসে না থেকে, তা প্রশংসার যোগ্য বলে মনে করছেন রাজৈনিতক বিশেষজ্ঞরা।
একুশে বাংলার নির্বাচনের বিজেপিকে গোহারা হারানোর পরই ত্রিপুরায় ঘাঁটি গাড়তে দৌত্য শুরু করেছিল তৃণমূল। তারপর নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে তৃণমূলকে। তবু পিছু হটেনি তৃণমূল। হোটেল থেকে দল চালিয়েও তৃণমূল পুরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নজরকাড়া ফলও করেছিল। কিন্তু উপনির্বাচনে ফের মুখ থুবড়ে পড়ে তৃণমূলের রথ।
তারপর তৃণমূল লড়াইকে আরও জোরদার করতে নতুন অফিস গড়ে তুলল। সোমবার তার দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়। আগরতলায় চিত্তরঞ্জন রোডে ত্রিপুরা তৃণমূলের পার্টি অফিস তৈরি হয়। এটি ত্রিপুরার সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিধানসভা কেন্দ্রে বনমালীপুরে অবস্থিত। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলার মন্ত্রী মলয় ঘটক, রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব, বঙ্গ তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, ত্রিপুরা তৃণমূলের সভাপতি সুবল ভৌমিক প্রমুখ।
এতদিনে ত্রিপুরায় তৃণমূলের একটা পার্টি অফিস হল। এবার নতুন উদ্যম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য হবে ত্রিপুরায় সুশাসন ফেরানো। ত্রিপুরায় দুর্নীতিপরায়ণ বিজেপি সরকারকে সমূলে উপড়ে ফেলতে এই অফিসই হবে আন্দোলনের আঁতুড়ঘর। তৃণমূলের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবার তৃণমূল আরও শক্তশালী হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের লড়াইয়ে শামিল হবে।
তৃণমূলের সদর কার্যালয়ের উদ্বোধনকে কটাক্ষ করে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেউ যদি চায় ভস্মে ঘি ঢালতে, তাহলে আমরা আর কী বলব। আমরা মনে করি তৃণমূলের এই উদ্যম, পার্টি অফিস উদ্বোধন ভস্মে ঘি ঢালা ছাড়া আর কিছু নয়। তৃণমূল যে ত্রিপুরায় কোনও ফ্যাক্টর নয় তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে উপনির্বাচনে। তৃণমূলের সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছে, আর তাদের ভোট কমে দাঁড়িয়েছে ২-৩ শতাংশে।
ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র মাস সাতেক বাকি। ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে ত্রিপুরায়। এবার ত্রিপুরায় বিজেপি-রাজের অবসান ঘটানোই তৃণমূলের উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যসাধনে তৃণমূল তাঁদের লড়াইকে এবার কোন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। কেননা উপনির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর তৃণমূল স্ট্র্যাটেজি বদলে নতুন উদ্যমে লড়াই শুরু করার আভাস দিয়েছে।