১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ কাণ্ডে ২৫ বছরের সাজা শেষ হলেই গ্যাংস্টার আবু সালেমকে ছেড়ে দিতে হবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে এই নির্দেশ জানিয়ে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এও বলেছে যে পর্তুগালকে আবু সালেমের প্রত্যাপর্ণের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্র তার মান্যতা রক্ষা করতে বাধ্য সরকার। উল্লেখ্য এই মামলায় সালেমের বক্তব্য, তার সাজার মেয়াদ কোনওভাবেই ২৫ বছরের বেশি হতে পারে না। কারণ, ২০০২ সালে ভারত প্রত্যার্পণের ব্যাপারে এমনই আশ্বাস পর্তুগালকে দিয়েছে।
বিচারপতি এসকে কউল ও এমএম সুন্দ্রেশের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্র সরকারকে জানিয়েছে যে আবু সালেমের সাজার মেয়াদ শেষ হলে সরকার সংবিধানের ৭২ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশের রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে বাধ্য। ২৫ বছরের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার একমাসের মধ্যেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, '২৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার একমাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি পাঠিয়ে দিতে হবে। এছাড়া সরকার নিজেই ২৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার একমাসের মধ্যে সিআরপিসির অধীনে ক্ষমা করার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।'
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশেষ টাডা আদালত আবু সালেমকে অন্য একটি মামলায় সাজা শোনায়। ১৯৯৫ সালে মুম্বইয়ের প্রমোটার প্রদীপ জৈন ও তাঁর গাড়ি চালক মেহেন্দি হাসানকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয় আবু সালেম। সালেম ১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলাতেও সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক খুন এবং তোলাবাজির মামলা রয়েছে। ২০০২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্তুগালে তাকে গ্রেফতার করে ইন্টারপোল। সেই সময় তার সঙ্গে ছিল অভিনেত্রী তথা বান্ধবী মণিকা বেদি। জিপিএস প্রযুক্তিতে তার স্যাটেলাইট ফোন ট্র্যাক করে তাকে পাকড়াও করা হয়। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষ তাকে ভারতের হাতে তুলে দেয়।
মুম্বই আন্ডারোয়ার্ল্ডের একসময়কার ত্রাস ছিলেন আবু সালেম। আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিশানায় অতীতে ছিলেন একাধিক বলিউড তারকা। ১৯৯৭ সালে জনবহুল রাস্তায় গুলশন কুমারকে গুলি করে হত্যা করার পেছনেও ছিল এই আবু সালেম, দাউদের হাত। শোনা গিয়েছিল, শাহরুখ খানকে খুন করতে নাকি শার্প শুটারকে সুপারি দিয়েছিলেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার আবু সালেম! আবু-ঘনিষ্ঠ এক প্রযোজকের সঙ্গে নাকি কাজ করতে রাজি হননি অভিনেতা তাই তাঁকে মারার পরিকল্পনা করা হয়। তবে সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি।