ঈদ-আল-আধা-এর উপলক্ষ্যে, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এবং পাকিস্তান রেঞ্জার্স আজ আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে মিষ্টি বিনিময় করল। বিএসএফ কমান্ড্যান্ট জসবীর সিং বলেছেন, "ঈদ আল-আধা উপলক্ষে, বিএসএফ যৌথ চেক পোস্ট (জেসিপি) আটারি সীমান্তে পাকিস্তান রেঞ্জার্সকে মিষ্টি উপহার দিয়েছে। এটা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে একটি ঐতিহ্যগত বিষয়। এই কাজ দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্য, শুভেচ্ছা এবং শান্তি বিনিময়ের প্রতীক বলে আমরা মনে করি।"
ঈদুল আযহা বা বকরা ঈদ, যা এই বছর ১০ জুলাই পালিত হচ্ছে। এই দিনটি অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এই উৎসবকে 'ত্যাগের উৎসব'ও বলা হয় এবং এটি ইসলামের ১২ তম মাস ধু আল-হিজ্জাহ এর দশম দিনে পালিত হয়। চন্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী এর মাধ্যমেই বার্ষিক হজ যাত্রার সমাপ্তি হয়।
এর উৎসবের তারিখ প্রতি বছর পরিবর্তন হয় কারণ এটি ইসলামিক চন্দ্র ক্যালেন্ডারের উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হয় যা ইংরেজি ৩৬৫-দিনের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের চেয়ে প্রায় ১১ দিন কম। ঈদ আল-আধা হল আনন্দ এবং শান্তির একটি উপলক্ষ, যা মানুষ তাদের পরিবারের সাথে উদযাপন করে, অতীতের ক্ষোভ ছেড়ে দেয় এবং একে অপরের সাথে অর্থপূর্ণ সংযোগ স্থাপন করে। এটি হযরত আব্রাহামের ঈশ্বরের জন্য সর্বস্ব উৎসর্গ করার স্মারক হিসেবে পালিত হয়।
এই অনুষ্ঠানের পিছনে রয়েছে ৪০০০ বছরের পুরনো ইতিহাস আছে। ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তা'আলা ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহীমকে স্বপ্নযোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেন।
ইব্রাহীম ১০টি উট কোরবানি দেন। পুনরায় তিনি একই স্বপ্ন দেখেন। অতঃপর ইব্রাহীম এবার ১০০টি উট কোরবানি দেন। এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করেন। এ সময় শয়তান আল্লাহর আদেশ পালন করা থেকে বিরত করার জন্য ইব্রাহীম ও তার পরিবারকে প্রলুব্ধ করে। ইব্রাহিম শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মেরেছিলেন। শয়তানকে তার প্রত্যাখ্যানের কথা স্মরণে হজ্জের সময় শয়তানের অবস্থানের চিহ্ন স্বরূপ নির্মিত ৩টি স্তম্ভে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
যখন ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তার পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য গলায় ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তার পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তার পুত্রের কোনও ক্ষতি হয়নি। ইব্রাহীম আল্লাহর আদেশ পালন করার দ্বারা কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ ইব্রাহীম তাঁকে তার খলিল (বন্ধু) হিসাবে গ্রহণ করেন।
।