চ্যাপেল অধ্যায়
এরই মধ্যে দ্য টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ মুখ খুলেছেন গ্রেগ চ্যাপেল অধ্যায় নিয়েও। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ই ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতির স্বার্থে নিয়ে এসেছিলেন গ্রেগ চ্যাপেলকে। যদিও সেই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর হয়নি। চ্যাপেল ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতি করা দূরের কথা, গোটা দলের ঐক্যকে নষ্ট করে তলানিতে পৌঁছে দিয়েছিলেন। সৌরভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল চ্যাপেলকে আনা তাঁর ভুল হয়েছিল কিনা। সৌরভ বলেন, যখন কাউকে নিয়োগ করা হয় তখন নিয়োগ করাটাই মূল বিষয়। তাতে যদি সুফল না মেলে, তা মেনে নিতেই হবে। এটাই জীবনের অঙ্গ। ফলে আমি এখনও মনে করি না ভুল করেছিলাম।
সেই সময়
চ্যাপেলের জন্য সৌরভের কেরিয়ারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৬ মাস নষ্ট হয়েছিল। সৌরভ মেনে নিয়েছেন, এটা কঠিন সময়ই ছিল। এই সময়কালে ভারতীয় দলে কামব্যাক করতে সৌরভকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হয়, দুরন্ত পারফরম্যান্সে নির্বাচকদের আস্থা অর্জন করে ফের মহারাজকীয় কামব্যাক। সৌরভ বলেন, পরিস্থিতি কঠিন হলেও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলাটা একেবারেই কঠিন ছিল না। কিন্তু যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার সঙ্গে আমার ব্যাটিং ও বোলিং দক্ষতার কোনও যোগ ছিল না। সেটা আমার নিয়ন্ত্রণেও ছিল না। ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার আগে টানা ১৩ বছর কোনও বিরতি না নিয়েই খেলেছি। একটা সিরিজ বা ট্যুর মিস করিনি। এখন যেমন ক্রিকেটাররা বিশ্রাম নেন, আমি তেমনটা করিনি। ১৭ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি। ফলে টানা ১৩ বছর খেলার পর যেটা হয়েছিল সেটা ৪ থেকে ৬ মাসের ব্রেক বলেই মনে করি।
ভুল ভাঙালেন
ভারতীয় দল থেকে বাদ যাওয়ার পর ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ভাবনা তাঁর মাথায় এসেছিল কিনা সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সৌরভ বলেন, এই কথাটি মোটেই সত্যি নয়। কিন্তু আমার রাগ হতো। হতাশ হতাম। কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতাম। নিজেকে প্রমাণ করতে মুখিয়ে ছিলাম। কিছু করে দেখাতে চাইছিলাম। আমি জানতাম তখনও আমার মধ্যে অনেক ক্রিকেট অবশিষ্ট রয়েছে। নিজেকে বুঝিয়েছিলাম যাঁর সামনে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দেওয়া জরুরি সেখানেই তা করে দেখাব। ১০ বছর আন্তর্জাতিকে ক্রিকেটে এত রান, একদিনের আন্তর্জাতিকে বিশ্বের চার নম্বর ব্যাটার থাকাকালীন অন্যায়ভাবে বাদ পড়ার ঘটনা আজও মেনে নিতে পারেন না মহারাজ। সৌরভ বলেন, এ কারণেই বলছি যে যেটা হয়েছিল তা আমার ব্যাটিং আর বোলিং সংক্রান্ত কোনও বিষয়ই ছিল না।
তৃপ্ত মহারাজ
একইসঙ্গে সৌরভ এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সময়টা ভেবেচিন্তে নিজেই নিয়েছিলেন। শেষ সিরিজে ভালো খেলে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়ার মধ্যে তৃপ্তি অনুভব করেন দাদা। প্রশাসক হিসেবে ইনিংসও ভালোই উপভোগ করছেন সৌরভ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যেভাবে বিসিসিআই টিম সৌরভের নেতৃত্বে বিতর্কে না জড়িয়ে এগিয়ে চলেছে সেটাও মহারাজের কাছে বিশেষ তৃপ্তির।