বর্ষার সময় বাড়বে জিকা
ফন্ট্রিয়ার্স অফ মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বর্ষার সময় এই জিকা কেস বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেখানে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশা-বাহিত রোগের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। এই সমীক্ষা প্রধান গবেষক আইসিএমআর-এনআইভি-এর বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ডাঃ প্রয়াগ যাদব জানিয়েছেন যে ২০১৭ থেকে ২০১২১ জিকা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল দেশের ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে।
কোন কোন রাজ্যে বর্তমানে সনাক্ত হয়েছে
কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেই মশা-বাহিত এই জিকা ভাইরাস ভারতের নতুন কিছু রাজ্যে সনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দিল্লি, অমৃতসর (পাঞ্জাব), আলিগড় ও কানপুর (উত্তরপ্রদেশ), জয়পুর ও যোধপুর (রাজস্থান), পুনে (মহারাষ্ট্র), রাঁচি (ঝাড়খণ্ড), হায়দরাবাদ (তেলঙ্গানা) ও তিরুবন্তপুরম (কেরল)। এইসব এলাকা ঘন জনবসতিপূর্ণ বলে পরিচিত। বৈজ্ঞানিক বলেন, 'আমাদের গবেষণায় ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে এবং এর উপর নজরদারি জোরদার করার জরুরি প্রয়োজন।' সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে জিকার জন্য ক্রমাগত এবং বর্ধিত নজরদারি প্রসবপূর্ব স্ক্রীনিংয়ের উপর জোর দেওয়া সময়ের প্রয়োজন কারণ এটি নবজাতক শিশুদের মধ্যে মাইক্রোসেফালি এবং জন্মগত অক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
মশা–বাহিত রোগের ওপর জোর দেওয়া হয়নি
এই সমীক্ষায় জোর দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে যে পুরো স্বাস্থ্য প্রক্রিয়া যখন কোভিড-১৯-এর সঙ্গে মোকাবিলা করার ওপর মনোযোগ দিচ্ছে সেই সময় মশা-বাহিত রোগগুলির সঙ্গে আপোস করা হয়েছিল। এর ফলে এই রাজ্যগুলিতে ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় মশার প্রজননের স্থান বেড়েছে এবং মশাদের অতিরিক্ত সংখ্যা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেওয়া হয়। ডাঃ যাদব বলেন, '২০২০ সালের পরে, কোভিড-১৯ প্রকোপের কারণে জিকা ভাইরাসের জনস্বাস্থ্য নজরদারি একই জোর দিয়ো চালিয়ে যাওয়া যাবে না; তারা ভবিষ্যতের জন্য জিকা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংরক্ষণ করে রেখেছে।'
৬৭ জন জিকা ভাইরাস পজিটিভ
২০২১ সালে ছয় মাসের মধ্যে দূরবর্তী স্থান থেকে জিকা প্রাদুর্ভাবের রিপোর্ট করায়, ভারতে রোগের বিস্তারের পরিমাণ বোঝার জন্য মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জিকার একটি পূর্ববর্তী স্ক্রীনিং করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন ডাঃ প্রয়াগ যাদব। জানা গিয়েছে, ১২৫০ জনের নমুনার মধ্যে ৬৭ জনের জিকা ভাইরাস পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে, যার মধ্যে তিনটি সহ-সংক্রমণ ছিল। ৬৭ জন পজিটিভ রোগীদের জ্বর ও গায়ে গুটি বেরনোর লক্ষণ দেখা দিয়েছিল।সমীক্ষা বলছে, ১৩.৪৩ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি, যেখানে ৮৬.৫৬ শতাংশ (৫৮) ক্ষেত্রে বহিরাগত রোগীদের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছিল। এগুলি ছাড়াও চারজন রোগী গুরুতর শ্বাসকষ্টের সম্মুখীন হয়েছিল, একজন রোগীর খিঁচুনি হয় এবং জন্মের সময় সন্দেহজনক হালকা মাইক্রোসেফালির একটি কেস কেরলের তিরুবনন্তপুরম থেকে রিপোর্ট করা হয়েছিল।
কোন কোন রাজ্য থেকে পূর্বে সনাক্ত হয়
জিকা ভাইরাস, যা ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে হু কর্তৃক আন্তর্জাতিক উদ্বেগের একটি জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি গুজরাত (২০১৭), তামিলনাড়ু (২০১৭), রাজস্থান (২০১৮), মধ্যপ্রদেশ (২০১৮)-তে সনাক্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে জিকা ভাইরাস কেস কেরল, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র থেকে সনাক্ত হয়।