ভারতীয় বিমান পরিষেবার আরও একটি দিগন্ত খুলে গেল। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও মঙ্গলবার কর্ণাটকের চিত্রদুর্গার অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জ থেকে অটোনোমাস ফ্লাইং উইং টেকনোলজি ডেমোনস্ট্রেটরের প্রথম ফ্লাইট চালিয়েছে। মানববিমান যুদ্ধবিমান তৈরিতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এটা বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ডিআরডিও জানিয়েছে, মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকেল ডিজাইনটি তৈরি করেছে অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্ট। বেঙ্গালুরুতে ডিআরডিও-র প্রধান গবেষণাগারে তা তৈরি হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত মোডে অপারেটিং হবে ওই বিমানের। বিমানটি টেক-অফ, ওয়েপয়েন্ট নেভিগেশন এবং মসৃণ টাচডাউন-সহ একটি নিখুঁত ফ্লাইট পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে। অটোনোমাস ফ্লাইং উইং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই সাফল্য অর্জন করেছে তারা।
ডিআরডিও জানিয়েছে, এই ফ্লাইটের সফল পরিচালনা ভবিষ্যতের মনুষ্যবিহীন বিমানের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির সঠিক রূপায়ণের ক্ষে্ত্রে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে এই গবেষণা। এই ধরনের কৌশলগত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ভারতকে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। এটা দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বিমানটি একটি ছোট টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দ্বারা চালিত হয়। বিমানের জন্য ব্যবহৃত এয়ারফ্রেম, আন্ডারক্যারেজ এবং পুরো ফ্লাইট কন্ট্রোল এবং অ্যাভিওনিক্স সিস্টেমগুলি দেশীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছিল। সেই বিচারে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি প্রয়োগ করে বিরাট সাফল্য পেয়েছে ডিআরডিও।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সায়ত্বশাসিত বিমান পরিষেবা চালুর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ডিআরডিওকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন, "এটি স্বায়ত্তশাসিত বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে একটি বড় সাফল্য। এই সাফল্য সামরিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর হওয়ার পথ প্রশস্ত করবে।"
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির ক্ষেত্রে ভারত ধীরে ধীরে আত্ম-নির্ভর হয়ে উঠছে। ডিআরডিও সেই তালিকায় আরও একটি দিগন্ত খুলে দিল ভারতের প্রতিরক্ষার জন্য। ডিআরডিও ফ্লাইং উইং টেকনোলজি প্রয়োগ করে মানববিহীন যুদ্ধ বিমান তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিল। ভারতের আগে অন্য দেশও এই সাফল্যের সরণিতে পৌঁছে গিয়েছিল।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এ বছরের শুরুতেই স্বায়ত্বশাসিক বিমান পরিষবায় চমক দিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি রাজ্যে একটি ব্ল্যাক হক বোর্ড উড়েছিল পাইলট ছাড়াই। ওই হেলিকল্পারটি সিমুলেটেড সিটিস্কেপের মধ্য দিয়ে ৩০ মিনিট পর্যন্ত উড়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে ফ্লাইটটি উড়ানো হয়। চার হাজার ফুট পর্যন্ত উড়েছিল ফ্লাইটটি। গতিবেগ ছিল ১১৫ থেকে ১২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা।