পদত্যাগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, মুম্বই ফিরছেন বিদ্রোহী বিধায়করা, মহারাষ্ট্রে ন’দিনের রাজনৈতিক সঙ্কটের এক ঝলক

বুধবার রাতে সুপ্রিমকোর্টের রায়ের পরেই পদত্যাগ করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের আস্থা ভোটের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে। এখন শিবসেনার বিদ্রোহীদের সমর্থনে বিজেপির মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তার সঙ্গে সঙ্গে গত নয় দিন ধরে চলা মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কট কাটল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কটের নয়দিনের এক ঝলক।

২১ জুন

বিধান পরিষদের ক্রশ ভোটিংয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সমস্ত শিবসেনা বিধায়দের জরুরি বৈঠকে ডাকেন। শিবসেনার সমস্ত বিধায়কদের কঠোরভাবে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু বৈঠকের দিন থেকেই শিবসেনার নেতা ও মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে সহ ১১ জন বিধায়ক গায়েব হয়ে যান। পরে জানা যায়, সুরাটের একটি পাঁচতারা হোটেলে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। শিন্ডে টুইটে জানান, বালা সাহেব ঠাকরের শিক্ষার সঙ্গে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না। বিদ্রোহের কারণ হিসেবে তিনি হিন্দুত্বের কথাও বলেন। এরপর শিবসেনা বিধানসভা দলের নেতার পদ থেকে একনাথ শিন্ডেকে সরিয়ে দেন। দলের প্রবীণ নেতা তথা বিধায়ক অজয় চৌধুরীকে এই পদে নিযুক্ত করে শিবসেনা।

২২ জুন

মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কটের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি করোনা আক্রান্ত হন। তাঁকে মুম্বইয়ের এইচএন রিলায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন শিবসেনা বিধায়ক নীতিন দেশমুখ সুরাট থেকে মুম্বই ফিরে আসেন। তিনি দাবি করেন, তাঁকে অপহরণ করে সুরাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সুরাটে যাওয়ার একদিন পরেই শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা গুয়াহাটি উড়ে যান। একনাথ শিন্ডে বলেন, তাঁকে শিবসেনার ৪০ জন বিধায়ক সমর্থন করেছেন। যার ফলে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় আনা যাবে না। তিনি বলেন, শিবসেনা একটি অবাস্তব জোটের সঙ্গে রয়েছে। শিবসেনার সেই অবাস্তব জোট থেকে বেরিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন।
উদ্ধব ঠাকরে বলেন, শিবসেনার নেতা কর্মী চাইলে তিনি দলের প্রধানের পদ থেকে সরে আসতে পারেন। এরপরে তাঁর শরদ পাওয়ার, সুপ্রিয়া শুলে ও জিতেন্দ্র আওহাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। উদ্ধব ঠাকরের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। তিনি সরকারি বাসভবন বর্ষা ছেড়ে তাঁর নিজস্ব বাসভবন মাতাশ্রীতে চলে যান।

জুন

ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়ালকে চিঠি লেখেন একনাথ শিন্ডে। তিনি বিধানসভা দলের নেতার পদ থেকে বহিষ্কার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁকে অপসারণের প্রস্তাবটি অবৈধ বলে দাবি করেন। কারণ সেই সময় শিবসেনার ৫৫ জন বিধায়কের মধ্যে মাত্র ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। এদিন শিবসেনার আরও চার বিধায়ক গুয়াহাটি পৌঁছয়। অন্যদিকে, বিজেপি মদতের সম্ভাবনা উস্কে দিয়ে শিবনাথ শিন্ডে মন্তব্য করেন, একটি জাতীয় দল তাঁদের প্রশংসা করেছে।

২৪ জুন

মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সঙ্কটের চতুর্থ দিনে বিজেপি বিদ্রোহী সেনাদের সঙ্গে যু্ক্ত থাকার সিদ্ধান্ত অস্বীকার করে। পাশাপাশি একনাথ শিন্ডে জানান, তাঁর সঙ্গে কোনও জাতীয় দলের যোগাযোগ নেই। শিবসেনা ১৬ জন বিধায়ককে অযোগ্য ঘোষণার দাবি করে ডেপুটি স্পিকারের কাছে আবেদন জমা দেয়। পাল্টা দুই নির্দল বিধায়ক ডেপুটি স্পিকারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার। কারণ বেনামি ইমেল থেকে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।

২৫ জুন

শিবসেনার বেশ কিছু কর্মী বিদ্রোহী বিধায়কদের অফিস ভাঙচুর করে। তারমধ্যে একনাথ শিন্ডে ও তার ছেলের অফিস ছিল। ডেপুটি স্পিকার ১৬ জন বিদ্রোহী স্পিকারকে নোটিশ জারি করে। অন্যদিকে, শিবসেনার তরফে জানানো হয়, যাঁরা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে। দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী শিবসেনার বিদ্রোহীদের নিন্দা করে ও উদ্ধব ঠাকরের পাশে থাকার বার্তা দেন। শিবসেনা ছয়টি প্রস্তাব গ্রহণ করে। সেখানে বলা হয়, বালা সাহেবের নাম শিবসেনা ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।

২৬ জুন

ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব প্রত্যাখানের বিরোধিতা করে একনাথ শিন্ডে সুপ্রিম কোর্টে যান। রাজ্যপাল কোশিয়ারি সুস্থ হয়ে রাজভবনে ফেরেন। আদিত্য ঠাকরের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে পরিচিত উদয় সামান্থ একনাথ শিবিরে যোগ দেন।

২৭ জুন

একনাথ শিন্ডে শিবিরকে স্বস্তি দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ডেপুটি স্পিকারের কাছে হলফনামা চায়। সেখানে জানতে চায়, কীভাবে তিনি বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করেছেন। সূত্রের খবর, এদিন উদ্ধব ঠাকরে দুবার পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শরদ পাওয়ারের জন্য তিনি নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। উদ্ধব ঠাকরে নয় জন মন্ত্রীর দায়িত্ব কেড়ে নেন। অন্যান্য মন্ত্রীদের সেই দায়িত্ব তুলে দেন।

২৮ জুন

বিদ্রোহী বিধায়কদের আবেগঘন বার্তা পাঠান উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন, আপনারা এখনও শিবসেনার হৃদয়ে বাস করছেন। শিন্ডে এক বিবৃতিতে জানান, তিনি ও বিদ্রোহী সেনারা শীঘ্রই মুম্বই ফিরে

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ফড়নবীশ, কে কে থাকবেন মন্ত্রিসভায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ফড়নবীশ, কে কে থাকবেন মন্ত্রিসভায়

More UDDHAV THACKERAY News  

Read more about:
English summary
A timeine of Maharashtra political crisis
Story first published: Thursday, June 30, 2022, 14:12 [IST]