পঞ্জাব বিধানসভায় অগ্নিপথ প্রতিরক্ষা নিয়োগ প্রকল্পের বিরোধিতা করে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার পঞ্জাব বিধানসভায় প্রস্তাবটি পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। তবে এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন দুই বিধায়ক অশ্বিনী শর্মা ও জঙ্গি লাল মহাজন।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান বলেন, তিনি শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবেন। এই প্রকল্প দেশের যুবকদের স্বার্থবিরোধী। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস বিধায়ক প্রতাপ সিং বাজওয়া জানান, কেন্দ্র সরকারে উচিত এই প্রকল্প প্রত্যাহার করা। আকালি বিধায়ক মনপ্রীত সিং অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করেছেন। দ্রুত এই প্রকল্প সরিয়ে নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করছেন। মনপ্রীত সিং বলেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা জেরে কেন্দ্র সরকার নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে। ২১ বছরের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়েছে।
কেন্দ্র সরকার ১৪ জুন সেনাবাহিনীতে স্বল্প মেয়াদে নিয়োগের বিষয়ে অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করে। সেখানে জানানো হয়, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীতে চার বছরের মেয়াদে দেশের ১৭ থেকে ২১ বছরের যুবকদের নিয়োগ করা হবে। যদিও দুই দিন পরেই কেন্দ্র সরকার অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করে।
অগ্নিপথ প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সারা দেশ জুড়ে সেনাবাহিনী চাকরি প্রত্যাশী যুবকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা মূলত চার বছরের মেয়াদের বিরোধিতা করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে ফিরে আসার পর কোথায় যাবেন। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ সহ দেশের একাধিক রাজ্য বিক্ষোভের আগুনে জ্বলতে থাকে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করে। বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করা হয়। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে একাধিক ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপি পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়। এছাড়াও বাসের ওপর হামলা চালানো হয়। বিক্ষোভকারীরা অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে ইঁট ছোড়েন। হায়দরাবাদে পুলিশের গুলিতে এক বিক্ষোভকরীর মৃত্যু হয়।
আজই শপথ ফড়নবীশের, ১৭০ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে দাবি বিজেপির
বিক্ষোভের পরেও কেন্দ্র নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। নির্ধারিত সময়ের অগ্নিপথ প্রকল্পের নিয়োগের আবেদন জমা নেওয়ার কাজ শুরু করে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, বিক্ষোভকারীরা আবেদন করতে পারবেন না। পুলিশে অভিযোগ থাকলে আবেদন করা যাবে না বা সেই আবেদন গ্রাহ্য করা হবে না। সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা এই বিক্ষোভের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। তাঁরা অভিযোগ করেন, এভাবে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে দেশের সম্পত্তি নষ্ট করে বিক্ষোভ করছেন, তারা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার উপযুক্ত নয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতীয় বিমানবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগের জন্য ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়েছে।