বন্যাকবলিত শিলচরে তীব্র জলকষ্ট
প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শিলচরের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। শিলচরের বাসুদেবনগরের স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম ঘোষ বলেছেন, 'বন্যার জল আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। আমার মা শয্যাশায়ী। মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা নৌকাও পাওয়া যায়নি। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণ নিয়ে আসছে। সেগুলো খেয়েই বেঁচে আছি। জলের তীব্র আকাল। বাধ্য হয়েই বন্যার জল পান কতে বাধ্য হচ্ছি।' শিলচরে ভারতীয় বিমান বাহিনী আকাশ পথে ত্রাণ বিতরণ করছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী হাত লাগিয়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও উদ্ধারকর্মীকে দেখতে পাওয়া যায়নি।
ত্রাণ বন্টনে অব্যবস্থা
ত্রাণ নিয়ে তুমুল অব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন শিলচরের অন্য এক বাসিন্দা সিমি দেব। তিনি বলেন, 'আমাদের সব কিছু জলের তলায়। ত্রাণের খাবারে কোনও রকমে বেঁচে আছি। ছেলেটা অসুস্থ। হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি না। নৌকা পেয়েছি। কিন্তু ২০০ মিটার যাওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা চাইছে। ত্রাণও নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু যাদের বাড়ির ওপর ত্রাণ পড়ছে, তারাই সব নিয়ে নিচ্ছে। উদ্ধারকর্মীদের গত এক সপ্তাহের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়নি।'
বাড়ছে ডাইরিয়া কলেরার প্রকোপ
শিলচর সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিলচরের স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় সড়কপথে যোগায়োগ সম্ভব, সেখানে ত্রাণ বিতরণ চলছে। কিন্তু বন্যা কবলিত এলাকায় আকাশ পথে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে ত্রাণ বিতিরণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শিলচরে বন্যা পরবর্তী অসুস্থতা শিলচরে বাড়তে শুরু করেছে। শিলচরের বিভিন্ন হাসপাতালে ডাইরিয়া, কলেরা রোগীর ভর্তির হার বাড়তে শুরু করেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শনিবার আকাশপথে শিলচরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এই নিয়ে তিনি দুই বার শিলচরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান। তিনি বন্যাকবলিত মানুষকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে অসম প্রশাসন জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। গত দুই দিন বৃষ্টি কমায় জোড় কদমে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। অসমের স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমায় রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সোমবার অসমের চার জেলায় আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে।