মহারাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে শিবসেনা ও বিদ্রোহী দলের মধ্যে বাগযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত তীব্র ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করছেন। বিদ্রোহীদের দলের থেকেও পাল্টা আক্রমণ চলছে। বালা সাহেবের প্রতি আবেগ উস্কে দিয়ে একনাথ শিন্ডে ছগান ভুজবলের সঙ্গে মন্ত্রিসভায় বসার জন্য উদ্ধব ঠাকরের নিন্দা করেন। ছুগান ভুজবল বালা সাহেব ঠাকরেকে গ্রেফতার করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে এনসিপির মন্ত্রীর যোগ তুলে আনেন।
শিন্ডে টুইটে বলেন, 'হিন্দুদের হৃদয় সম্রাট তথা শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালা সাহেব ঠাকরেকে গ্রেফতার করা নেতা ছগান ভুজবলের সঙ্গে মন্ত্রিসভায় বসতে আপনার কোনও কষ্ট হয় না? ' ২০০০ সালে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালা সাহেব ঠাকরেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সময় মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা ছগান ভুজবল।
ভুজবল আগে শিবসেনার সদস্য ছিলেন। ছয়ের দশকে তিনি শিবসেনায় যোগদান করেন। শহরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ছগন ভুজবল সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৮৫ সালে প্রথম তিনি মাজগাঁও আসন থেকে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ও জয়লাভ করেন। কিন্তু বালা সাহেব ঠাকরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসেবে মনোহয় যোশীকে নিযুক্ত করেন। এরপরেই ভুজবল দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি মন্ত্রীত্ব পান। দ্রুত শরদ পাওয়ার ঘনিষ্ট হয়ে ওঠেন।
১৯৯৫ সালে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে গিয়েছিলেন। তিনি বিধান পরিষদে বিরোধী দলনেতা হন। কংগ্রেস ত্যাগ করার পর শরদ পাওয়ার নিজের দল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি গঠন করেন। সেই দলের প্রথম রাজ্য সভাপতি ছিলেন ছগন ভুজবল। ১৯৯৯ সালে কংগ্রেস-এনসিপি জোট মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করে। সেই সময় ভুজবল মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে ১৯৯২-৯৩ সালে শিবসেনা মুখপাত্র সামনার বিরুদ্ধে একটি মামলায় বালা ঠাকরেকে গ্রেফতার করেছিলেন।
রবিবার সকালে একনাথ শিন্ডে টুইটে বলেন, বালা সাহেব ঠাকরের দল কীভাবে দাউদ ইব্রাহিমের সরাসরি সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের সমর্থন করতে পারে? মুম্বই বিস্ফোরণের মাস্টার মাইন্ড ছিল দাউদ ইব্রাহিম। তিনি দাবি করেন, এই ধরনের সমর্থনের তিনি বরাবর বিরোধী। তাই তিনি প্রতিবাদ করছেন। বালা সাহেব ঠাকরের শিবসেনাকে বাঁচাতে তিনি প্রাণ পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন।
মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংকটে ডেপুটি স্পিকারকে নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের! পরবর্তী শুনানি ১১ জুলাই
রবিবার রাতে শিন্ডে ফের একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি বলেন, এনসিপি নেতা নবাব মালিকের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের পরিবারের যোগাযোগ প্রমাণ মিলেছে। বর্তমানে তিনি আর্থিক তছরুপের অভিযোগে জেলে রয়েছেন। সঞ্জয় রাউত বিদ্রোহীদের 'আত্মা ছাড়া শরীর' বলে কটাক্ষ করেছিলেন। পরের পর টুইট করে একনাথ শিন্ডে রাউতের কথার জবাব দেন। তিনি বলেন, 'শিবসেনা ও বালা সাহেব ঠাকরের আদর্শকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ চলে গেলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করব।'