বিদ্যুত আনার কাজ শুরু
ওড়িশা সরকার শনিবার ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার এনডিএ রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর পৈতৃক গ্রাম উপর্বেদার একটি অংশে বিদ্যুৎ আনার কাজ শুরু করেছে। এতকাল সেখানে অন্ধকারেই ছিল মানুষ। তিনি রাষ্ট্রপতি হিসাবে এনডিএ'র প্রার্থী হচ্ছেন এই খবর সাংবাদ মাধ্যমের কাছে পৌঁছাতেই অনেকেই তাঁর গ্রামের মানুষদের বক্তব্য নিতে ছুটে যান। তা করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে অন্য গল্প। মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সহজ বক্তব্য, গ্রামের মেয়ে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অথচ তাঁর গ্রাম ডুবে গভীর অন্ধকারে। এতেই হয়েছে কাজ। বিদ্যুৎ আনার কাজ শুরু হয়েছে।
গ্রামের মেয়ে
মুর্মু অবশ্য এখন ওই গ্রামে থাকেন না। কয়েক দশক আগে তিনি কুসুম ব্লকের অন্তর্গত উপরবেদা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে একটি পৌর শহর রায়রংপুরে চলে এসেছেন।
তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে কাজ
টাটা পাওয়ার নর্থ ওডিশা ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের (টিপিএনওডিএল) আধিকারিকরা এবং কর্মীরা মাটি খনন করার মেশিন, বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং ট্রান্সফরমার নিয়ে উপর্বেদায় গিয়েছিলেন যে অংশে এখনও পৌঁছানো হয়নি সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে।টিপিএনওডিএল-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "আমরা কোম্পানির ময়ূরভঞ্জ বিভাগে বিদ্যুৎ আনার কাজ সম্পূর্ণ করতে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুরো গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য একটি আদেশ জারি করেছি।"
উপর্বেদা গ্রাম
৩৫০০ মানুষের বাস উপর্বেদা গ্রামে। এর দুটি ভাগ। একটি অংশের নাম বাদশাহী। সেখানে সম্পূর্ণ বিদ্যুত এসে গিয়েছে। কিন্তু ডংগুরসাহি অর্থাৎ দ্বিতীয় অংশ, সেখানে মাত্র ১৪টি পরিবারের নিবাস। সেখানে এখনও বিদ্যুৎ আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, ডুঙ্গুরসাহিতে বনভূমিতে বাড়িঘর তৈরি হওয়ায় বিদ্যুৎ আনা যায়নি। এবার সেই কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, "আমাদের গ্রামবাসীদের অন্ধকারে রাখার কোন উদ্দেশ্য নেই, তবে নির্দিষ্ট সরকারী ছাড়পত্রের অভাবে এমনটি হয়েছিল।"
মুরমুর ভাগ্নে বিরাঞ্চি নারায়ণ টুডু তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সাথে ডুঙ্গুরসাহি গ্রামে থাকেন। তিনি বলেন ,"আমরা আমাদের ডুঙ্গুরসাহি গ্রামে বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য অনেক লোককে অনুরোধ করেছিলাম। তবে, কেউ কোনো কর্ণপাত করেনি। মুর্মু উৎসবের সময় গ্রামে বেড়াতে আসেন , মানে যোগাযোগ আছে। তারপরেও বিষয়টি কারও নজরে আসেনি। ২০২৯ সালের নির্বাচনের সময় বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক এবং সাংসদকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি। গ্রামে সন্ধ্যা হলেই তাই লন্ঠন জ্বলে। সেই দিন এবার শেষ হতে চলেছে।
প্রাক্তন সাংসদ সালখান মুর্মু, ভবেন্দ্র মাঝি এবং প্রাক্তন মন্ত্রী কার্তিক মাঝির জন্মস্থানও ওই উপর্বেদা গ্রাম। তাতেও উপেক্ষিত সেখানকার মানুষ। প্রসঙ্গত, সরকারী সূত্র বলছে যে ময়ূরভঞ্জ জেলায় ৫০০টি গ্রামে কোনও ভালো রাস্তা নেই এবং ১৩৫০টি গ্রামে বিদ্যুৎ নেই।