অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্র কম্প্যাক্ট কালার বায়োফাইন্ডার
মানোয়ার হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করেছেন ওই অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্র কম্প্যাক্ট কালার বায়োফাইন্ডার। একটি নতুন গবেষণা অনুসারে বহির্জাগতিক জীবনের প্রমাণ খুঁজতে গিয়ে ওই যন্ত্র তাঁদের সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বি্জ্ঞানীরা। সম্প্রতি এই গবেষণা রিপোর্ট 'সায়েন্টিফিক রিপোর্টস' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
বায়োফাইন্ডারে শনাক্ত করা যেতে পারে বেশিরভাগ জৈবিক পদার্থ
ওই কম্প্যাক্ট কালার বায়োফাইন্ডার দিয়ে শনাক্ত করা যেতে পারে বেশিরভাগ জৈবিক পদার্থ। উদাহরণস্বরূপ, অ্যামিনো অ্যাসিড, জীবাশ্ম, পাললিক শিলা, গাছপালা, জীবাণু, প্রোটিন এবং লিপিডগুলিতে যে শক্তিশালী জৈব ফ্লুরোসেন্স সংকেত রয়েছে, তা কম্প্যাক্ট কালার বায়োফাইন্ডারের বিশেষ স্ক্যানিং ক্যামেরা দ্বারা শনাক্ত করা যেতে পারে।
৩৪ থেকে ৫৬ মিলিয়ন বছরের পুরনো জীবাশ্ম
ওই গবেষক দল জানিয়েছে, কম্প্যাক্ট কালার বায়োফাইন্ডার এতই সংবেদনশীল যে এটি ৩৪ থেকে ৫৬ মিলিয়ন বছরের পুরনো সবুজ নদী গঠন থেকে মাছের জীবাশ্মের জৈব-অবশেষ নির্ভুলভাবে শনাক্ত করতে পারে। হাওয়াই ইন্সটিটিউট অফ জিওফিজিক্স অ্যান্ড প্ল্যানেটোলজির প্রধান যন্ত্র বিকাশকারী এবং গবেষক অনুপম মিশ্র বলেন, "বায়োফাইন্ডার হল এক বিশেষ ধরনের সিস্টেম।"
বায়োফাইন্ডারটি ২০১২ সালে মিসরা দ্বারা প্রথম প্রকাশ্যে
তাঁর কথায়, "বর্তমানে এমন অন্য কোনও যন্ত্র নেই যা দিনের বেলায় একটি পাথরের উপর জৈব অবশিষ্টাংশ শনাক্ত করতে পারে৷ বায়োফাইন্ডারের অতিরিক্ত শক্তি হল এটি কয়েক মিটার দূর থেকে কাজ করে, ভিডিও নেয় এবং দ্রুত একটি বড় এলাকা স্ক্যান করতে পারে৷" যদিও বায়োফাইন্ডারটি ২০১২ সালে মিসরা দ্বারা প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে নাসার পিকাসো তরফে যে কমপ্যাক্ট বায়োফাইন্ডার আনা হয়, তা সর্বশেষ রঙিন সংস্করণ বলে দাবি করা হয়েছে।
বিশাল গ্রহের ল্যান্ডস্কেপে জৈবিক অবশিষ্টাংশের প্রমাণ
বিশাল গ্রহের ল্যান্ডস্কেপে জৈবিক অবশিষ্টাংশের প্রমাণ পাওয়া একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। গবেষকরা প্রাচীন সবুজ নদীর মাছের জীবাশ্মগুলিতে বায়োফাইন্ডারের শনাক্তকরণ ক্ষমতা পরীক্ষা করেছে এবং পরীক্ষাগার স্পেকট্রোস্কোপি বিশ্লেষণ, ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি স্ক্যানিং এবং ফ্লুরোসেন্স লাইফটাইম ইমেজিং মাইক্রোস্কোপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে সঠিক সিদ্ধান্ত পৌঁছতে সক্ষম হচ্ছে।
জৈবিক অবশিষ্টাংশগুলি লক্ষ লক্ষ বছর বেঁচে থাকতে পারে
মিসরা বলেন, "জৈব-অবশেষ কত দ্রুত জীবাশ্ম প্রক্রিয়ায় খনিজ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় সে সম্পর্কে কিছু অজানা আছে। তবে আমাদের অনুসন্ধানগুলি আরও একবার নিশ্চিত করে যে জৈবিক অবশিষ্টাংশগুলি লক্ষ লক্ষ বছর বেঁচে থাকতে পারে এবং ফ্লুরোসেন্স ইমেজিং ব্যবহার করে বাস্তব সময়ে এই সেগুলিকে শনাক্ত করা যায়।"
বায়োফাইন্ডারকে মঙ্গল বা অন্য গ্রহে রোভারে বসানো হয় যদি
প্রাণের সন্ধান পাওয়া নাসা বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মিসরার কথায়, "যদি বায়োফাইন্ডারকে মঙ্গল গ্রহে বা অন্য কোনও গ্রহে রোভারে বসানো হয়, তাহলে আমরা দ্রুত বৃহৎ এলাকা স্ক্যান করে অতীত জীবনের প্রমাণ শনাক্ত করতে সক্ষম হব। তিনি আরও বলেন, "আমরা আশা করি যে ফ্লুরোসেন্স ইমেজিং ভবিষ্যতে নাসার মিশনে কার্যকর ভূমিকা নেবে।"