দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আমলা সঞ্জয় পোপলির ছেলের চণ্ডীগড়ে নিজ বাসভবনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুকে ঘিরে ইতিমধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ২৭ বছরের কার্তিক পোপলি আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশের দাবি অস্বীকার করেছেন আইএএস অফিসার সঞ্জয় পোপলি। তিনি জানিয়েছে, তাঁর সামনেই ছেলেকে গুলি করে মারা হয়েছে। তিনি তাঁর ছেলের হত্যার অন্যতম সাক্ষী।
আমলা সঞ্জয় পোপলির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের তদন্ত করতে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পুলিশের দলটি যখন বাড়িতে আসে, কার্তিক সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। ভিজিল্যান্স আধিকারিকদের সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে। আত্মহত্যা করেছে কার্তিক নাকি তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, এই বিষয়ে প্রতিবেশীরা কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। চণ্ডীগড়ের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট কুলদীপ চাহাল বলেন, অভিযানের জন্য দুর্নীতি দমন শাখার পুলিশ যখন অভিযুক্ত আইএএস অফিসারের বাড়িতে গিয়েছিলেন, কার্তিক বাড়িতে ছিলেন। সেই সময় ২৭ বছরের ওই যুবক পুলিশের ওই দলটির সামনেই গুলি করে আত্মহত্যা করেন। তিনি সঞ্জয় পোপলির লাইসেন্স বন্দুক দিয়েই আত্মহত্যা করেছেন।
সঞ্জয় পোপলির বিরুদ্ধে পঞ্জাবের নাওয়ান শহরে স্যুয়ারেজ পাইপলাইন বসানোর টেন্ডার ছাড়ার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগে সঞ্জয়কে গত ২০ জুন গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার পুলিশের একটি দল তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায়। সঞ্জয়ের বাড়ি থেকে বেশ কিছু সোনা ও রূপোর মুদ্রা, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সঞ্জয়ের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তদন্তকারী আধিকারিকেরা তাঁদের মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে।
সাংবাদিকদের গ্রেফতার হওয়া আমলা সঞ্জয় পোপলির স্ত্রী জানান, পুলিশ নানাভাবে তাঁদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছিল। তাঁরা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের এক পরিচারিকার ওপরও পুলিশ অত্যাচার করে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, 'পুলিশের অত্যাচারেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলে একজন সফল আইনজীবী ছিলেন।'
সঞ্জয় পোপলির বাড়িতে এখনও লেগে রয়েছে ছেলের রক্তের দাগ। সেই দাগ দেখিয়ে সঞ্জয় পপলির স্ত্রী অভিযোগ করেন, ভিজিল্যান্স ব্যুরো দলের আধিকারিকদের চাপেই কার্তিকের মৃত্যু হয়েছে। আধিকারিকরা একটা মিথ্যা মামলা সাজানোর চেষ্টা করছে যেখানে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা যায় বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, সেই কারণেই নানাভাবে পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। তল্লাশি চালানোর সময় পুলিশের সঙ্গে কার্তিকের বচসা শুরু হয়। বচসার মধ্যেই কার্তিককে গুলি করে পুলিশ হত্যা করে বলে সঞ্জয় পোপলির স্ত্রী অভিযোগ করেছেন।