দিল্লির দূষণ গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়। আর এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে বৃহস্পতিবার দিল্লি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ট্রাক ও অন্য মাঝারি ও ভারী যানের প্রবেশ জাতীয় রাজধানীতে নিষিদ্ধ।
এক বিবৃতিতে দিল্লি সরকার বলেছে, ১ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে কোনও ট্রাক প্রবেশ করবে না। সাধারণত, সরকার নভেম্বর বা ডিসেম্বরে ট্রাক ও ছোট টেম্পোগুলির প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিল্লিতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার ট্রাক দিল্লিতে ধারাবাহিকভাবে প্রবেশ করে। যেসব যান শহরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে তার মধ্যে রয়েছে সিএনজি চালিত বাণিজ্যিক যানবাহন, ই-ট্রাক, সবজি, ফল, শস্য, ডিম, বরফ, দুধ ও অন্যান্য খাবার সহ জরুরি জিনিস বহনকারী ট্রাক ও জ্বালানি তেল বহনকারী ট্যাঙ্কারগুলি দিল্লিতে প্রবেশ করার অনুমতি পাবে।
তবে দিল্লি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ট্রাক ও বাণিজ্যিক যানের সংগঠনগুলি। তারা জানিয়েছে যে অক্টোবর থেকে ফ্রেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারী যানের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলে তাদের কোটি টাকার ওপর লোকসান হয়ে যাবে। অন ইন্ডিয়া গুডস ট্রান্সপোর্ট সংগঠনের সভাপতি রাজেন্দ্র কাপুর জানিয়েছেন, রাজধানীতে ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ১৫-২০ দিনের জন্য গ্রহণযোগ্য হলেও কয়েক মাস নিষিদ্ধ করলে তা ব্যবসায় প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, 'ব্যবসায় এর গুরুতর প্রভাব পড়বে। শুধু তাই নয়, সরকারের রাজস্বের ওপরও প্রভাব পড়বে এবং খাদ্য, শাকসবজি এবং অন্যান্য জিনিলের দাম বৃদ্ধিতে পরিণত হতে পারে।' তিনি এরপর সরকারের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, 'শুধুমাত্র ট্রাকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কেন? আপনারা কেন দিল্লিতে চলা অন্যান্য ডিজেল যানগুলির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না। যদি ডিজেল একটি বিশিষ্ট দূষণকারী হয়, ডিজেল যানবাহন উৎপাদন নিষিদ্ধ করা উচিত। এটা কোনও সমাধান নয়।'
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর ধরে শীতকালে রাজধানীতে বাতাসের গুণমাণের সূচক (একিউআই) ক্রমাগত নিম্নগামী হচ্ছে। দূষণকারী পার্টিকুলেট ম্যাটার ২.৫ বা পিএম ২.৫-এর মাত্রা শীতের মাসগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শিল্প নিঃসরণ, স্বয়ংচালিত নির্গমন এবং ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর জন্য দায়ী।