ব্রহ্মপুত্র ও বারাক নদীর জলস্তর বৃদ্ধির জেরে অসমের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অসমের একাধিক এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। অসমের বন্যার জেরে ৩২টি জেলার ৫৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যা ও ভূমিধসের কারণে অসমে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ট্রেনে নওগাঁ যান। বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির তিনি পরিদর্শন করেন।
অসমের বন্যায় নগাঁওর ৪,৫৭,৩৮১ জন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ১৪৭টি ত্রাণ শিবিরে ১৫,১৮৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা টুইটে জানিয়েছেন, 'গুয়াহাটি থেকে চাপারমুখ ও কামপুরের বন্যাকবলিত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছি। বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে ট্রেন যাত্রা বেছে নিয়েছি। যার ফলে বন্যা মোকাবিলায় সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। কপিলি নদীর জলে নগাঁতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।' ভবিষ্যতে এই ধরনে বিপর্যয় রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি চাপারমুখ রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। সেখানে বন্যাকবলিত বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। ত্রাণ পাচ্ছেন কি না জানতে চান। টুইটারে তিনি লেখেন, 'রেলস্টেশনে আশ্রয় নেওয়া বন্যাকবলিতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি। জেলা আধিকারিকদের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে ও পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ করতে নির্দেশ দিয়েছি।'
বারাক ও কুশিয়ারি নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে একাধিক জায়গা প্লাবিত হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী কাছাড় জেলার জলবন্দি বাসিন্দাদের উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থার কর্মীরা বাকি দুই জেলায় উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। অসম প্রশাসন সূত্রের খবর কাছাড় জেলার ৫০৬টি গ্রামের ২,১৬,৮৫১ জন, করিমগঞ্জের ১,৪৭,৬৪৯ জন ও হাইলাকান্দিতে প্রায় এক লক্ষ বাসিন্দা বন্যার কবলে পড়ছেন।
অসম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৮৬২টি ত্রাণ শিবিরে ২,৬২,১৫৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ৫,৫৭৭টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কাপিলি নদী নগাঁও জেলার কামপুরে এবং ব্রহ্মপুত্রের জল নিমাতিঘাট, তেজপুর, গুয়াহাটি, কামপুর, গোয়ালপাড়া ও ধুবড়িতে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়াও পুথিমারি, পাগলদিয়া, বেকি বরক ও কুশিয়ারার মতো বেশ কয়েকটি নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। যার জেরে অসমে বন্যা পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি হতে পারে।
কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে ২৩৩টি শিবিরের মধ্যে ১৪টি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ১১টি বন্যপ্রানী জলে ডুবে মারা গিয়েছে। পবিটোরা অভায়রণ্যে ২৫টি শিবিরের মধ্যে ১৪টিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রানীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।