ইউরোপীয় ফুটবলের কিংবদন্তি তিনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দীর্ঘ ২৪ বছরের ৬৭২ ম্যাচে ১১৪ গোল করেছেন, তিনি রায়ান গিগস। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দলের মাঝেমাঠের প্রাধান কাণ্ডারী ছিলেন গিগস। ফুটবলার হিসেবে যেমন সফল্য পেয়েছেন তেমনই প্রশিক্ষক হিসেবে অর্জন করেছেন কৃতিত্ব। দীর্ঘ ৬৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ওয়েলসকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে তুলেছেন রায়ান গিগস। দীর্ঘ ছয় দশক পর নিজের দেশকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে তুলেও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন গিগস।
১৯৫৮ সালের পর কখনও বিশ্বকাপে পা রাখেনি ওয়েলস। ২০১৮ সালে নিজের দেশ ওয়েলসের প্রাধান কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি। তার অধীনেই ওয়েলস দলে লাগে পরিবর্তনের ছোঁয়া। গ্যারেথ বেল পেয়েছেন প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ। পিছনের কাজটা করেছিলেন ৪৮ বর্ষী ফুটবল নক্ষত্রের মস্তিস্ক। গোট দল যখন ব্যস্ত সময় পার করছে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে, তখনই পত্যাগের কথা ঘোষণা দিলেন গিগস।
গিগসের বান্ধবী তাঁর বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ ও জবরদস্তিমূলক আচরণ করার অভিযোগ তুলে ছিলেন, একই সঙ্গে কিংবদন্তি ফুটবলারের বিরুদ্ধে শারীরী আক্রমণ এবং লাঞ্ছনারও অভিযোগ তোলেন ওই মহিলা। কিন্তু বরাবরই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন গিগস। এর ফলে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকেই অনেকটা দূরত্ব বজায় রেখে তিনি চলছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই মামলার কোনও নিস্পত্তি না হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়া গিগস জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে নিজেরে সরিয়ে নিলেন। পদত্যাগের ক্ষেত্রে নিজের বিবৃতিতে গিগস বলেছেন, "জাতীয় দলকে কোচিং করানো এক বড় সম্মানের বিষয়। তবে, এটাও ঠিক যে ওয়েলস এফএ, কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়রা তাদের প্রধান কোচের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত, কাজেই জল্পনা ছাড়াই তারা টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিগত তিন বছরে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে একাধিক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত আমি উপভোগ করতে পেরেছি। আমি আমার রেকর্ডের জন্য গর্বিত এবং চিরকাল সেই বিশেষ সময়গুলোকে লালন করব। এক সঙ্গে এই পথ চলা শেষ করতে না পরার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমি বিশ্বাস করি ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পর ফের এক বার বিশ্ব ফুটবলের সর্ব শ্রেষ্ঠ মঞ্চে এই অসাধারণ দলটি গোটা দেশকে গর্বিত করবে।"
ফুটবলার জীবনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে গিগস জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, ফুটবল লিগ কাপ, এফএ কমিউনিটি শিল্ড, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ, ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপ এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ।