আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। দেশের বাজারে সেই হারে বাড়ছে না পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। যার জেরে খুচরো জ্বালানি বিক্রেতাদের লিটার প্রতি ২০ থেকে ২৫টাকা কমে ডিজেল ও লিটার প্রতি ১৪-১৮ টাকা কমে পেট্রোল বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এই পরিস্থিতিতে জিওবিপি ও নায়রার মতো বেসরকারি জ্বালানি বিক্রেতা সংস্থা তেল মন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন করেছে।
১০ জুন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে দাম বাড়ছে না পেট্রোল-ডিজেলের। যার জেরে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে খুচরো ব্যবসায়ীদের। এই বিষয়ে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আবেদন করা হয়।
ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রির এই আবেদনে বেসরকারি জ্বালানির খুচরো বিক্রেতাদের সঙ্গে আইওসি, বিপিসিএল, এইচপিসিএল মতো রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন সংস্থাগুলো যোগ দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক দশকে পণ্যের দাম ও অপরিশোধিত তেলের দাম দ্রুত গতিতে বেড়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন জ্বালানির খুচরো বিক্রেতারা তিন ভাগের দুই ভাগ দাম বাড়িয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন জ্বালানির খুচরো বিক্রেতারা বাজারের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। একাধিক খুচরো জ্বালানি বিক্রেতা সংস্থা এই বিষয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা বোধ করছে। তারা যদি ক্ষতি কমাতে জ্বালানির দাম বাড়ায়, সেক্ষেত্রে গ্রাহক হারাবে। আবার তারা যদি জ্বালানির দাম এক রেখে গ্রাহক আটকে রাখতে চায়, সেক্ষেত্রে সংস্থাগুলোকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ইতিমধ্যে জিওবিপি ক্ষতি কমাতে পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে।
অস্থির বাজারের মধ্যেই দেশে ২০২১-এর নভেম্বরের শুরু থেকে ২০২২-এর মার্চ পর্যন্ত ১৩৭ দিন পর্যন্ত পেট্রোল ও ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেই চলতি বছরের ২২ মার্চ থেকে দ্রুত পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়তে থাকে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ পয়সা করে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ে। যার জেরে পেট্রোল ও ডিজেল উভয়ক্ষেত্রেই লিটার প্রতি দাম ১০ টাকা বাড়ে। তারপরেও লিটার প্রতি ২০-২৫টাকা ক্ষতিতে পেট্রোল ও লিটার প্রতি ১৪-১৮ টাকা ক্ষতিতে ডিজেল বিক্রি করছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা।
অগ্নিপথ নিয়ে প্রতিবাদ ব্যক্তির, গাড়ি থামিয়ে কথা বললেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী
ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর জেনারেল গুরমিত সিং বলেন, ৬ এপ্রিল থেকে পেট্রোল ডিজেলের খুচরো দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। যার জেরে খুচরো ব্যবসায়ীদের নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। বেসরকারি তেল বিপণন সংস্থাগুলো কঠিন সময়ের মধ্যে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বেসরকারি সংস্থাগুলো তাদের বিক্রি কমিয়ে আনতে বাধ্য হবে। যা প্রভাব বিক্রেতা সংস্থাগুলোর স্টক হোল্ডার, পরিবহণকারী সংস্থা, সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মচারীদের ওপর পড়বে।