বিজেপির দুই প্রাক্তন মুখপাত্রের নবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে বিশ্ব জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ইরান ইতিমধ্যে সরকারিভাবে মন্তব্যের নিন্দা করেছে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল আমেরিকা। নবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, 'দেখে ভালো লাগছে, দলটি প্রকাশ্যে এই মন্তব্যের নিন্দা করেছে।'
বিজেপির প্রাক্তন দুই মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দলের বিতর্কিত মন্তব্যে ইতিমধ্যে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রাদায়িক অশান্তি হয়। বিতর্কের রেশ দেশ ছাড়িয়েও বিদেশের মাটিতে পড়ে। বিশ্বের ২০টির বেশি দেশ এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে। তবে কূটনৈতিকভাবে ভারত চাপে পড়ার আগেই বিজেপি নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। বিজেপি দল থেকে তাঁদের বহিষ্কার করে। কেন্দ্র সরকার বিবৃতি দিয়ে জানায়, ভারত প্রতিটি ধর্মকে সম্মান করে। তারপরেও বিতর্ক থামেনি।
এই প্রসঙ্গে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, 'ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বধীনতা ও মানবাধিকার খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়ে আমরা সব সময় ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলি। আমরা সব সময় মানবাধিকার রক্ষার জন্য ভারতকে উৎসাহ দিই।' এরপরেই তিনি বলেন, 'বিদেশ সচিব গত বছর নয়াদিল্লিতে গিয়েছিলেন।
সেখানে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ভারতীয় ও মার্কিন নাগরিকরা একই মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। মানবাধিকার, সমতা, ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্রের মৌলিক মূল্যবোধ। আমেরিকা সব সময় এই বিষয়ের ওপর জোর দেয়। এগুলো না থাকলে দেশের গণতন্ত্রের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়।' তবে ভারতের মানবাধিকার ইস্যুতে আমেরিকা একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছে। অনেক ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও আমেরিকা নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও আমেরিকা ভারতকে সতর্ক করেছে। গত বছরেও মার্কিন বিদেশ সচিব ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। একাধিক ইস্যু সামনে এনেছিল। পাল্টা কেন্দ্র অভিযোগ করেছিল, ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমেরিকা নাক গলানোর চেষ্টা করছে।
বিজেপির তৎকালীন মুখপাত্র নূপুর শর্মা ২৬ মে নবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। পাশাপাশি বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য নবীন জিন্দলের নাম উঠে আসে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সঙ্গে আরব দেশগুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। কুয়েতের সুপার মার্কেট থেকে কিছুদিনের জন্য ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়। আরব দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে ইরান এই বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করে।
দেশের মানুষ কী চান প্রধানমন্ত্রী বোঝেন না, অগ্নিপথ প্রকল্প ইস্যুতে কেন্দ্রকে নিশানা রাহুল গান্ধীর
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারিভাবে এই বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করেনি। যার জেরে শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরে সমালোচনার শিকার হয়েছেন। এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বাংলাদেশে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল হয়।