কমল রান্নার তেলের দাম
লাগাতার ঊর্ধ্বমুখী একাধিক ভোগ্যপণ্যের মূল্য। আর তাতে এককথায় নাভিশ্বাস উঠছে দেশের আম জনতার। কিন্তু এরই মাঝে খানিক স্বস্তি দিয়ে অবশেষে কমল ব্র্যান্ডেড রান্নার তেলের দাম। এই সূত্রে খবর, ব্র্যান্ডেড পাম তেল, সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল সহ একাধিক প্রকারের ভোজ্য তেলের দাম লিটার প্রতি কমেছে সর্বাধিক ১৫ টাকা পর্যন্ত। সম্প্রতি মূল্যের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ব্র্যান্ডেড পাম তেলের দাম লিটারে ৭ থেকে ৮ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে ৫টাকা করে, এবং সূর্যমুখী তেল লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে কমেছে। আর এতেই খানিক শান্তি পেয়েছেন রান্নাঘরের মাস্টার শেফরা।
ভারতের উদ্ভিজ তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সুধাকর রাও দেশাই খাবার তেলের এই দাম কমার বিষয়ে বেশ আশাবাদী মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও। এই বিষয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি জানিয়েছেন, ভোজ্যতেলের দাম কমার প্রভাব অনেকাংশে পড়বে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির উপরেও। এছাড়া তেলের দাম কম হওয়ায় ডিস্ট্রিবিউটরদের স্টক বাড়াতেও সাহায করবে। উল্লেখ্য, জেমিনি এডিবলস অ্যান্ড ফ্যাট নামক একটি হায়দ্রাবাদী কোম্পানি গত সপ্তাহে তাদের সানফ্লাওয়ার তেলের ১৫ টাকা দাম কমিয়েছে। এই সপ্তাহে ফের ২০ টাকা কমানো হবে বলে ঘোষণা করেছে। আর তা হলে ভোজ্য তেলের দামের পারদ আরও একটু নীচে নামবে বলেই আশায় বুক বাঁধছেন সাধারণ মানুষ।
কমেছে তেলের আমদানি
প্রসঙ্গত, ভারতে পাম তেলের আমদানি অনেকাংশেই নির্ভর করে ইউরোপের একাধিক দেশের উপরে। আর সেই তালিকায় সামিল রয়েছে রাশিয়া, ইউক্রেনের মত দেশও। এপ্রিল মাসের থেকে মে মাসে ১০ শতাংশ কম হয়েছে। এপ্রিল মাসে আমদানি হয়েছে ৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৫০৮ টন তেল। মে মাসে সেখানে পাম তেল আমদানি হয়েছে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ২২ টন। আবার সেইসঙ্গে ইন্দোনেশিয়া থেকেও তেল রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। আর তার সম্মিলিত ফলেই বেড়েছে তেলের দাম, এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
কেন বেড়েছিল তেলের দাম?
ভারত মূলত ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি করে। ভারত প্রতি বছর ১৩.৫ মিলিয়ন তেল আমদানি করে। তারমধ্যে ৮-৮.৫ মিলিয়ন টন পাম তেল। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪ মিলিয়ন টন পাম তেল আমদানি করে ভারত।
ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানির ওপর এপ্রিল মাসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মে মাসে যদিও সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরে ভারতে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে তেলের দাম নিম্নমুখী হয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা হলেও শুধরাবে বলেই আশা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে আম জনতার।