করোনা মহামারীর জেরে জারি করা কোভিড ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল চিন। প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে এই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। যার জেরে চিনের কর্মরত ভারতীয়রা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারছিলেন না। বেজিং সরকার চিনে কর্মরত ভারতীয় ও তাঁদের পরিবারকে আবার ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সোমবার ভারতে চিনা দূতাবাসের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানেই দুই বছর পর চিনা সরকারের ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। চিনে কর্মরত ভারতীয়রা ভিসার আবেদন করতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় পরে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার সম্ভাবনার খবরে কিছুটা স্বস্তি। চিনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতেন।
করোনা মহামারীর সময় তাঁরা দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু বেজিং সরকারের নিষেধাজ্ঞার জেরে তাঁরা আবার চিনে গিয়ে পড়া শুরু করতে পারছিলেন না। বেশ বিপাকে পড়েছিলেন তাঁরা। এই বিষয়ে তাঁরা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চিনে গিয়ে পড়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সোমবার চিনের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, চিনা নাগরিকদের পরিবার বা স্থায়ীভাবে চিনে বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত বিদেশিদের পরিবার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। বেজিং সরকারের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও বিমান বাতিলের জেরে চিনের অনেক নাগরিক অসুবিধায় পড়েছিলেন। বেশ কয়েকজন ভারতীয়ের স্ত্রী চিনের নাগরিক। করোনা মহামারী, ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও বিমান বাতিলের জেরে তাঁরা চিনে আটকে পড়েছিলেন। পরিবারের সঙ্গে এবার তাঁরাও মিলিত হওয়ার সুযোগ পেলেন। বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত অনেক চিনা নাগরিক ভারতে আটকে পড়েছিলেন। এবার তাঁরা দেশে ফিরতে পারবেন।
তবে চিনা দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, পর্যটন ভিসা এখনও দেওয়া হচ্ছে না। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দীর্ঘ আলোচনার পর বেজিং সরকার বেশ কিছু ভারতীয় পড়ুয়াকে চিনে ফিরে আসার অনুমতি দিয়েছিল। ভারতীয় দূতাবাসকে চিনে ফিরে পড়তে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের তথ্য সংগ্রহের কথা বলেছিল।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২৩ হাজারের বেশি ভারতীয় পড়ুয়া চিনে পড়াশোনা করেন। তার মধ্যে বেশিরভাগ চিনের বিভিন্ন কলেজে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে চিনে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখতে পাওয়া যায়। যার জেরে ভারতীয় পড়ুয়ারা ২০২০ সালের শুরুর দিকেই দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু চিনা সরকারের ভিসা নিষেধাজ্ঞার জেরে তাঁরা ভারতে আটকে গিয়েছিলেন। বাধ্য হয়েই তাঁদের অনলাইনেই পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, ১২ হাজারের বেশি পড়ুয়া চিনে ফিরে গিয়ে পড়া শেষ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করে চিনা সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিনের সরকার কিছু ক্ষেত্রে ভিসার অনুমতি দিলেও, দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু করার বিষয়ে কোনও ঘোষণা করেনি।
৯০০০ ছুঁই ছুঁই দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা
শুধুমাত্র দুই দেশের কূটনীতিকরা তৃতীয় দেশের সাহায্য নিয়ে যাতায়াত করছেন। যা যথেষ্ট ব্যয় বহুল। সম্প্রতি চিন তাদের কয়েকটি মিত্র দেশ যেমন শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, থাইল্যান্ডের পড়ুয়াদের ফিরে আসার অনুমতি দিয়েছে। এবার ভারতীয় পড়ুয়ারাও চিনে গিয়ে পড়া শেষ করার অনুমতি পেতে চলেছে।