তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন উপনির্বাচনের প্রচারে ত্রিপুরায়, তখন তাঁর বাড়িতে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে। এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার আগরতলার মঞ্চ থেকে গর্জে উঠলেন অভিষেক। সাফ জানালেন, ওঁরা ভাবছে ধমকালে, চমকালে আমরা ভয় পেয়ে যাব, কিন্তু যতই ধমকান-চমকান, কাঁচকলা করবেন।
অভিষেক বলেন, আমি ত্রিপুরায় আসব বলে, বাড়িতে সিবিআই পাঠিয়েছে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। ভেবেছে আমি ত্রিপুরায় আসতে পারব না। কিন্তু আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না, তৃণমূলকেও ভয় দেখিয়ে ঠেকাতে পারবে না। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে এজেন্সি আছে, আর আমাদের সঙ্গে আছে মানুষ। এটাই আমাদের শক্তি। তাই বিজেপির এজেন্সিকে আমরা ভয় করি না।
কয়লা কেলেঙ্কারির মামলায় মঙ্গলবার সিবিআই আধিকারিকরা তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে নিশানা করলেন৷ তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীকে সিবিআই-এর চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে ত্রিপুরা সফর থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। এ প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনি আমার শিরশ্ছেদ করলেও আমরা কখনই মাথা নত করব না। যতক্ষণ না শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করব, ততক্ষণ লড়াই চলবে।
সিবিআইয়ের আট সদস্যের দল মঙ্গলবার সকালে ভবানীপুর এলাকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে পৌঁছে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তের বিষয়ে তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় আসন্ন উপনির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রচার চালানোর সময় সিবিআই এই অবস্থান নেয়। তাই গর্জে ওঠেন অভিষেক। পাল্টা নিশানা করেন বিজেপিকে।
ত্রিপুরায় পরিবর্তন হবেই! ২৩শে উপনির্বাচন থেকেই ২০২৩-এ বিজেপিকে উৎখাতের ডাক অভিষেকের
অভিষেক বলেন, "বিজেপি ভেবেছে ধমকালে, চমকালে আমরা চুপ করে যাব। কী ভেবেছে, আমরা অন্য দল। আমরা ভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি, আমাদের হুমকি দিয়ে কোনও লাভ নেই। আমার আজ ত্রিপুরায় আসার কথা ছিল আর সিবিআই গতকাল আমার স্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে জেরা করতে চেয়ে। যাতে আমাকে ত্রিপুরা যেতে বাধা দিতে পারে, তার জন্যই এই জিজ্ঞাসাবাদ। অভিষেক বলেন, এসব করেও আপনি কিছু করতে পারবেন না। আমার শিরশ্ছেদ করলেও আমরা কখনও মাথা নত করব না!"
তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, কেন্দ্রের শাসক বিজেপি দু'বার পেট্রোলের দাম কমিয়েছে, কারণ তারা বাংলায় গোহারা হেরেছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার নয়, বিজেপি আসলে ডাবল চোরের সরকার চালাতে চায়। রাজ্যেও চুরি করবে, দিল্লিতেও চুরি করবে। আপনারা আচ্ছে দিন পাননি। আপনারা কি ভেবেছিলেন পেট্রোলের দাম ১০০ টাকার উপরে উঠবে? রান্নার গ্যাসের দাম হাজার টাকা হবে? কিন্তু এই বিজেপি সরকারের আমলে তা হয়েছে। বিজেপি সরকারকে সরালে গ্যাসের দাম, পেট্রোপণ্যের দাম আবার ৫০০ টাকার নীচে নেমে যাবে। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন।
অভিষেক বলেন, আমরা যদি বাংলায় দরজা খুলে দিই, বিজেপি পার্টিটাই শেষ হয়ে যাবে। মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেও বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিজেপি দাবি করে যে, তারা ৫০ কোটি সদস্য-সহযোগে বিশ্বের বৃহত্তম দল। তাহলে তারা কেন আমাদের মতো ছোট দলের কাছে হেরে যাবে? কেন আমাদের মতো ছোটো দলের কাছে হারের ভয় পাবে। ত্রিপুরায় তৃণমূল পা রেখেছে বলেই বিজেপি এখানে মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে বাধ্য হয়েছে। বাইশে মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে, তেইশে সরকারটাই বদলে যাবে।