টিভিতে স্টারেই, ডিজিটালে ভায়াকম
বিসিসিআই মিডিয়া স্বত্বাধিকারী চূড়ান্ত করার জন্য ই-অকশনের ব্যবস্থা। চারটি বিভাগ রাখা হয়েছে। প্যাকেজ এ ও প্যাকেজ বি ছিল যথাক্রমে টেলিভিশন সম্প্রচার ও ডিজিটাল সম্প্রচারের জন্য। এই দুটি বিভাগ মিলিয়ে ৪১০টি ম্যাচের জন্য আইপিএলের মিডিয়া স্বত্বের মোট দর পৌঁছে গিয়েছে ৪৪,০৭৫ কোটি টাকায়। ভারতীয় উপমহাদেশে টিভি স্বত্ব বিক্রি হয়েছে ২৩,৫৭৫ কোটি টাকায়। যা দখলেই রেখেছে ডিজনি স্টার। ভায়াকম ডিজিটাল রাইটস কিনেছে ২০,৫০০ কোটি টাকার বিনিময়ে। টিভি সম্প্রচারের দরের নিরিখে ডিজিটাল স্বত্বের ভ্যালু বা মূল্য ১৩ শতাংশ কম বলে জানা যাচ্ছে। উল্লেখ্য়, রিলায়েন্সের ভায়াকম সম্প্রতি স্পোর্টস ১৮ চ্যানেল এনেছে। এবার কাতারে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপ এই চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে। এবার আইপিএলের ডিজিটাল রাইটস নিশ্চিত হওয়ার পর দ্রুতই মুকেশ আম্বানির সংস্থা নতুন অ্যাপ আনবে বলে জানা যাচ্ছে।
রেকর্ড ভেঙেই চলেছে
দ্বিতীয় দিনের শেষে ডিজিটাল স্বত্বের দর ছিল ১৯,৬৮০ কোটি টাকায়। সেটিই আজ ছাড়িয়ে গেল ২০ হাজার কোটি টাকার গণ্ডি। তবে দুই দিনেও শেষ করা যায়নি ই-অকশন প্রক্রিয়া। টিভি ও ডিজিটাল রাইটসের পাশাপাশি নন-এক্সক্লুসিভ ডিজিটাল (১৮টি বিশেষ ম্যাচ) ও বিশ্বের বাকি অংশের সম্প্রচার স্বত্ব কারা পাবে তা চূড়ান্ত হবে ই-অকশন প্রক্রিয়ার শেষে। আপাতত প্যাকেজ সি-র নন-এক্সক্লুসিভ ডিজিটাল রাইটসের নিলাম প্রক্রিয়া চলছে। এই ম্যাচগুলির মধ্যে থাকছে চারটি প্লে অফ ও ১৩টি সান্ধ্যকালীন ডাবল হেডারের ম্যাচ। এই প্যাকেজের বেস প্রাইস রাখা ছিল ১,৪৪০ কোটি টাকা। যা দ্বিতীয় দিনের শেষে পৌঁছে গিয়েছে ১,৮১৩ কোটি টাকায়। মনে করা হচ্ছে, তৃতীয় দিনে তা পৌঁছাতে পারে ১,৯৪০ কোটি টাকায়। বিশ্বের বাকি অংশের সম্প্রচার স্বত্ব ১,৬১০ কোটি টাকায় পৌঁছে যাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের বাকি অংশের জন্য প্রতি ম্যাচের দর ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। সেটা কোথায় পৌঁছাবে তাও দেখার।
দর কোথায় পৌঁছে গেল দ্বিতীয় দিনের শেষে?
দ্বিতীয় দিনের শেষে আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ব থেকে বোর্ডের ঘরে ৪৫,৮৮৮ কোটি টাকা ঢোকা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। সবমিলিয়ে তা এবার ৫০ হাজার কোটির কতটা পৌঁছাবে তা জানতে আগামীকাল অবধি অপেক্ষা করতে হবে। ইতিমধ্যেই প্রথম দুটি বিভাগ, অর্থাৎ টিভি ও ডিজিটাল স্বত্বই আইপিএলের প্রতি ম্যাচের দর পৌঁছে দিয়েছে ১০৭.৫ কোটি টাকায়। যা আইপিএলকে নিয়ে গিয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় খেলার ইভেন্টগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। ১০৭.৫ কোটি টাকা বা ১৩.৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এখন আইপিএলের প্রতিটি ম্যাচের মূল্য। আমেরিকার পেশাদার ফুটবল লিগ, যা ন্যাশনাল ফুটবল লিগ বা এনএফএল নামে পরিচিত, তার প্রতি ম্যাচের দর ৩৫.০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরই এই প্রতিযোগিতা সম্প্রচারের জন্য ১০ বছরের চুক্তি
সম্পাদিত হয়েছে। ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল অবধি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রতি ম্যাচের মূল্য ১১.৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে ইপিএলকে ইতিমধ্যেই পিছনে ফেলে দিয়েছে আইপিএল।
আইপিএলে ম্যাচ বাড়ানোর ইঙ্গিত
এ বছর থেকে আইপিএলে ম্যাচের সংখ্যা বাড়িয়ে ৭৪ করা হয়েছে। সেই নিরিখে মোট ম্যাচ হয় ৩৭০টি। কিন্তু ৪১০টি ম্যাচ হবে ধরে এগোচ্ছে বিসিসিআই। তাতে ইঙ্গিত আইপিএলের ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানোও হতে পারে। জানা যাচ্ছে, যদি প্রতি মরশুমে ৭৪টি ম্যাচ হয় তাহলে স্পেশ্যাল ম্যাচের সংখ্যা থাকবে ১৮, যেটা সি বিভাগে ধরা হচ্ছে। আইপিএলের ম্যাচের সংখ্যা আরও বাড়লে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বাড়বে স্পেশ্যাল ম্য়াচের সংখ্যা। যেমন, প্রতি মরশুমে ম্যাচের সংখ্যা বেড়ে ৮৪ হলে স্পেশ্যাল ম্য়াচ হবে ২০টি। ৯৪টি ম্যাচ হলে স্পেশ্যাল ম্যাচ ২২টি।
আগের তুলনায় কতটা বৃদ্ধি?
২০১৮ থেকে ২০২২ অবধি আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব স্টার ইন্ডিয়া রেকর্ড চুক্তিতে কিনেছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী আইপিএলের প্রতি ম্য়াচের দর ছিল ৫৪.২৩ কোটি টাকা। তা এবার পৌঁছে গিয়েছে ১০৭.৫ কোটি টাকায়। যা ৯৮ শতাংশ বেড়েছে। টিভি ও ডিজিটাল স্বত্ব মিলিয়ে দর বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৬৩ শতাংশ। ফলে এই পাঁচ বছর আইপিএলে বিজ্ঞাপনের দর চলতি বছরের তুলনায় ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।