উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে পোস্টার ছড়িয়ে পড়ার পরে একটি মামলা দায়ের করেছে। নবী মহম্মদ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যের জের এখনও ভুগছে ভারত। শুধু দেশ নয়, বিদেশ থেকেও ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া আসছে। এমন সময়ে নূপুর শর্মার সমর্থনে পোস্টার! এমন ঘটনাই ঘটেছে দিল্লিতে। আর এতেই দ্রুত ব্যাবস্থা নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
সোমবার, নূপুর শর্মার সমর্থনে আগ্রার ওয়াজিরপুরা এলাকায় বেশ কয়েকটি পোস্টার পড়ার পরে পুলিশ দ্রুত কার্যত অ্যাকশনে নামে। পোস্টারগুলি দ্রুত সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে পুলিশ এবং যারা এটি লাগিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আগ্রার এসএসপি সুধীর কুমার সিং তথ্য পেয়েছিলেন যে নাগলা বেনি প্রসাদের একটি মন্দিরে নূপুর শর্মার সমর্থনে কিছু পোস্টার এসেছে। পোস্টারগুলি সরানো হয় এবং ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলিও ট্র্যাক ডাউন করা হয় এবং সরিয়ে ফেলা হয়। তদন্তের পর মন্দিরের পুরোহিতসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, নূপুর শর্মার সমর্থনে মন্দিরে আরতির আয়োজন করেছিলেন পুরোহিত পণ্ডিত অনন্ত উপাধ্যায়। আরতিতে ভক্তদের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পদাধিকারীরা অংশ নেন। আরতির পরে, এলাকায় পোস্টার লাগানো হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে উত্তেজক স্লোগান তোলা হয়। এই স্লোগানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।
এদিকে, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ অনুশীলনের জন্য আগ্রা পুলিশ লাইনে একটি মক ড্রিল আয়োজন করা হয়েছিল। পুলিশ কর্মীদের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে বন্দুক পরিচালনার জন্য বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। এডিজি রাজীব কৃষ্ণবলেছেন যে প্রতিটি জেলায় এমন অনুশীলন করা হচ্ছে।
নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের একাধিক রাজ্যে। প্রভাব পড়েছে বাংলাতেও। হাওড়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে অশান্তির খবর সামনে এসেছে। যদিও প্রতি ঘটনার ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থ নেয় পুলিশ। রাতারাতি ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এমনকি বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেটও। এই অবস্থায় মোটের উপর শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি রয়েছে হাওড়া সহ বিভিন্ন এলাকায়। যদিও যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এই অবস্থায় আজ সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম। কড়া ভাষায় কার্যত বার্তা দেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাংলায় যে শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর সেই বিষয়টি স্পষ্ট জানিয়ে দেন। পাশাপাশি ছোট-বড় প্রত্যেকটি ঘটনায় পুলিশ কড়া হাতে ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও এদিন জানিয়েছেন জাভেদ শামিম। তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত ৪২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। শুধুমাত্র হাওড়াতেই ১৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন শামিম। এছাড়াও গ্রামীণ হাওড়াতেও ৯টি এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি আইনশৃঙ্খলা।