নবী বিতর্ক ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সমালোচনা এড়াতে মন্তব্য বাংলাদেশের মন্ত্রীর

নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে উত্তাল দেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাম্প্রদায়িক বিক্ষোভের খবর আসতে শুরু করেছে। সেই রেশ আছড়ে পড়েছে বিদেশের মাটিতেও। তবে বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও নিন্দা প্রকাশ করেনি। যার জেরে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার নিজের দেশেই সমালোচনার মুখে পড়েছে। তবে সেই সমালোচনাকে বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী নবী বিতর্ককে 'ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়' বলে উল্লেখ করেন।

ভারতীয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদ জানান, নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে ভারত সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেই কারণে ভারত সরকারকে অভিনন্দন। নবীর বিরুদ্ধে যে কোনও বক্তব্যের নিন্দা করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই মন্তব্যের জেরে ভারতের অভ্যন্তরেই একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হাসান মাহমুদ আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই বিতর্কের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও যোগ নেই। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই ইস্যুতে মালয়েশিয়া, পাকিস্তানের পাশাপাশি আরব উপসাগরীয় দেশগুলো বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ অন্য দেশের বিষয় নিয়ে এতটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। তবে তিনি মনে করছেন, নবীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করা হলে সব সময় প্রতিবাদ করা উচিত।
বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করেনি। এর জেরে বাংলাদেশ সরকার নিজের দেশেই সমালোচিত হচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, বাংলাদেশ সরকার আপোষ করেছে ভারতের সঙ্গে। সেই কারণেই ঢাকা আনুষ্ঠানিকভাবে বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করতে পারেনি। তবে আপোষের অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জানিয়েছে, তিনি নিজে জনসভায় এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি মনে করছেন, ভারত সরকার এই মন্তব্যকে কখনই সমর্থন করেনি। তাই বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য বিজেপির নেতা-নেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি দাবি করছেন, বাংলাদেশের কিছু ধর্মান্ধ গোষ্ঠী রয়েছে। তারা এই ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। নতুন করে দেশের অভ্যন্তরে অশান্তির আগুন জ্বালাতে চাইছে। সেই কারণেই ওই গোষ্ঠীগুলো সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। তবে বাংলাদেশে এই ধরনের ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সংখ্যা কম।
বাংলাদেশের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশকেও অনেক সময় এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। অনেক সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়কে কেন্দ্র করে একাধিক ভারতীয় নেতা মন্তব্য করেন। যা সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নেয়। কিন্তু এই ধরনের মন্তব্য কখনই কাম্য নয়। নবী বিতর্কের থেকে বাংলাদেশ সরকার যে দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্কের ওপর জোর দিতে চাইছে, তা তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট। তিনি করোনা মহামারীর সময় ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন। দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে বলেন, মহামারীর সময় নয়াদিল্লি ঢাকাকে ১১০টি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছে। করোনা টিকাকরণের সময় ভারতের সাহায্য তিনি উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বিজেপি জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে বরখাস্ত করেছে। অন্যদিকে, দিল্লির মিডিয়ার সংযোগকারীর প্রধান নবীন জিন্দলকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। তবে, তাতে বিতর্ক দমানো সম্ভব হয়। বিশ্বের একধিক মুসলিম প্রধান দেশ নবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন।

More BANGLADESH News  

Read more about:
English summary
Bangladesh Minister said that prophet remarks controversy is India’s internal issue
Story first published: Monday, June 13, 2022, 23:58 [IST]