করোনা কাটিয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের অর্থনীতি, দাবি মার্কিন ট্রেজারি কংগ্রেসের

করোনা আবহে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ব্যাপক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল। ভারতও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। করোনায় লক ডাউনের প্রভাবে ভারতীয় অর্থনীতির উপরেও বিগত প্রায় দুই বছর ধরে নেমে এসেছে নানা বিপর্যয়। রেকর্ড হারে শেয়ার বাজার পতন, দেশের জিডিপি হ্রাস, এছাড়াও একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু এতকিছুর পরেও ভারতের অর্থনীতি নিয়ে কিছুটা হলেও আশার বাণী শোনাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক সংস্থা। আর এই বিষয়ে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি কংগ্রেস তাদের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনার তিনটি ঢেউ সুনামির মত আছড়ে পড়েছে গোটা ভারতে। কিন্তু তারপরেও ভারতীয় অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।


ট্রেজারি অর্ধবার্ষিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২১ সালে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় কার্যত শ্মশানপুরিতে পরিণত হয়েছিল গোটা দেশ। আর ঠিক সেই সময় পুনরায় লকডাউন ঘোষণা হওয়ার ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ধস নামে। কিন্তু সেই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হতে বেশ কিছু সময় লেগেছে। শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বছরের দ্বিতীয়ভাগে এসে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ভারতে টিকাকরণ অতিদ্রুত সম্পন্ন হওয়ায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।

২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৪ শতাংশ জনগণের সম্পূর্ণরূপে টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালে বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। ২০২১ সালে ভারতে সার্বিক ভাবে ৫৪ শতাংশ হারে আমদানি বৃদ্ধি হয়েছে। এই বছর রফতানিও অনেকটাই বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু আমদানির তুলনায় রফতানি অবশ্য অনেকটাই কম ছিল বিগত বছরে। তবে এই পরিস্থিতিও দ্রুত কাটিয়ে উঠে আবার আন্তর্জাতিক বাজারে নানা পণ্যদ্রব্য রপ্তানিতে গতি আনছে ভারত, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো উন্নতির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্লুমবার্গ সূত্রে খবর, ২০২০ সালে ভারতের জিডিপির ১.৩ শতাংশের কারেন্ট অ্যাকাউন্টের বেশি রেকর্ড করেছে। ২০০৪ সালের পর এটি প্রথম আর্থিক উদ্বৃত্ত হিসেবে সামনে এসেছে। ভারত বগত বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে ১.১ শতাংশ জিডিপির কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতিতে ফিরে এসেছে। ২০২২ সালের প্রথম থেকেই ভারতে করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন হামলা চালিয়েছে। ওমিক্রনের কারণে ভারতে তৃতীয় ঢেউও এসেছে। কিন্তু প্রথম দুই ওয়েবের তুলনায় এক্ষেত্রে দেশে মৃত্যুর হার ছিল অনেকটাই কম। করোনা কালে লকডাউন কাটিয়ে পুনরায় নিউ নর্মালে ফেরার পরথেকে ভারত সরকার দেশের অর্থনীতিতে আর্থিক সহায়তা করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

Weather Update: আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থেকে মুক্তি! দক্ষিণবঙ্গে কতটা এগোল বর্ষা, একনজরে বাংলার আবহাওয়াWeather Update: আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থেকে মুক্তি! দক্ষিণবঙ্গে কতটা এগোল বর্ষা, একনজরে বাংলার আবহাওয়া

তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ভারতের জিডিপির ৬.৯ শতাংশে পৌঁছাবে, যা মহামারীর আগের ঘাটতির চেয়ে বেশি। সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার সঙ্কটের পর ভারতেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এদিকে শ্রীলঙ্কা তাদের দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় দুটি নতুন মন্ত্রক তৈরি করেছে, যাতে পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করছে ভারত। মার্কিন ট্রেজারি রিপোর্ট অনুসারে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০২০ সালের মে থেকে তার মূল নীতির হারগুলি চার শতাংশ পয়েন্টেই অপরিবর্তিত রেখেছে, যার জন্য তুলনামূলকভাবে দ্রুত করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে ভারত।

More NATIONAL News  

Read more about:
English summary
indian economy has rebounded strongly after corona says usa treasury