গাঁজা যেমন নেশার দ্রব্য, তেমনি তার রয়েছে বহু ঔষধি গুণ। আর সেই কারণেই এশিয়ার প্রথম দেশ হিসাবে থাইল্যান্ড গাঁজা চাষকে বৈধ ঘোষণা করল বৃহস্পতিবার। তবে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল জানিয়েছেন যে নেশা করার জন্য যাঁরা গাঁজা ব্যবহার করবে তাঁদের জন্য উচ্চ জরিমানা করা হবে।
এক সাক্ষাতকারে অনুতিন চার্নভিরাকুল জানিয়েছেন যে গাঁজার আইনি উৎপাদনকে অপরাধমুক্ত করার পদক্ষেপটি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে এও জানিয়েছেন যে মাদকের বিনোদনমূলক ব্যবহার এখনও অবৈধ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের এখনও আইনের অধীনে প্রবিধান রয়েছে যা অউৎপাদনশীল উপায়ে গাঁজা পণ্য সেবন, ধূমপান বা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে।' তবে লাইসেন্স ছাড়া গাঁজা উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জানা গিয়েছে এই দেশের ক্যাফে ও রেস্তোরাঁগুলিতে গাঁজা-মিশ্রিত খাবার ও পানীয় পরিবেশন করা যেতে পারে, যদি সেখানে ০.২ টেট্রাহাইড্রোকানাবিনল থাকে। যেটি গাঁজা গাছের প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান। স্বাস্থ্য মন্ত্রী এও জানিয়েছেন যে জনসমক্ষে গাঁজা সেবন করলে তা জনস্বাস্থ্য আইন অনুযায়ী তিনমাসের জেল ও ৮০০ ডলার জরিমানা করা হবে।
অনুতিন বলেন, 'আমরা সবসময় চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এবং স্বাস্থ্যের জন্য গাঁজা নিষ্কাশন এবং কাঁচামাল ব্যবহার করার উপর জোর দিয়েছি।' তিনি এও বলেন, 'এমন একটি মুহূর্ত কখনও আসেনি যে আমরা মানুষকে বিনোদনের ক্ষেত্রে গাঁজা ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়ার কথা ভাবি বা এটি এমনভাবে ব্যবহার করি যাতে এটি অন্যদের বিরক্ত করতে পারে।' বিশেষ করে জনসমক্ষে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে প্রযোজ্য।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গাঁজার নীতির প্রচার করবে সরকার। যদি কোনও পর্যটক এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন বা কোনও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত পণ্যের জন্য আসেন তবে কোনও ব্যাপার নয়। কিন্তু কোনও পর্যটক যদি এটা ভেবে আসেন যে থাইল্যান্ডে গাঁজা বা মারিজুয়ানার ব্যবহার বৈধ হয়ে গিয়েছে এবং এখানে এসে যথেচ্ছ প্রকাশ্যে ধূমপান করা যাবে, তবে তাঁরা ভুল ভাবছে।
থাইল্যান্ডে এ রকম পর্যটকদের স্বাগত জানানো হবে না। অনুতিন আশা করথেন থাই গাঁজা শিল্প কৃষিকে বাড়িয়ে বিলিয়ন ডলার আয় করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আশা করছি সহজেই এই শিল্প ২ বিলিয়ন ডলারের ছাড়িয়ে যাবে। সারা দেশে ১০ লক্ষ গাঁজার গাছ বিনামূল্যে বিতরণ করার জন্য কৃষি মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।'
এমনিতে ঐতিহাসিকভাবে থাইল্যান্ডে মাদক-বিরোধী আইন কার্যকর ছিল। সেই পরিস্থিতিতে মারিজুয়ানাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।