পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এবার এক হিন্দু মন্দিরে ঘটল হামলা।পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুরা। তাঁদের এক উপাসনালয় ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে এমনটাই খবর।
বুধবার পাকিস্তানের করাচি শহরে একটি হিন্দু মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, করাচির কোরাঙ্গি এলাকায় শ্রী মারি মাতা মন্দিরের ভেতরে রাখা মূর্তিগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। মন্দিরটি কোরাঙ্গী থানার সীমানার মধ্যে "জে" এলাকায় অবস্থিত। ঘটনাটি করাচিতে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতির সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে কোরাঙ্গি এলাকায় এই ঘটনার জেরে আতঙ্ক অনেকটা বেশি ছিল। যেখানে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ছয় থেকে আটজন মোটরসাইকেলে করে ওই এলাকায় ঢুকে মন্দিরে হামলা চালায়। এদিকে এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হয়েছে। পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু জনসংখ্যার মন্দিরগুলি প্রায়ই জনতার হিংসার কবলে পড়ে। অক্টোবরে, কোটরিতে সিন্ধু নদীর তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মন্দির অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মধ্যরাতের পর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি মন্দির চত্বরে ঢুকে তাদের দেবদেবীর মূর্তি ভাঙচুর করে। অগাস্টে, স্থানীয় সেমিনারিতে প্রস্রাব করার অভিযোগে একটি আট বছর বয়সী হিন্দু ছেলেকে স্থানীয় আদালত জামিন দেওয়ার পর কয়েক ডজন লোক ভোং শহরে একটি হিন্দু মন্দির ভাংচুর করে এবং সুক্কুর-মুলতান মোটরওয়ে অবরোধ করে বলে জানা গিয়েছিল। আদালতের সিদ্ধান্তের পর, একদল যুবক জড়ো হয়ে শহরের শ্রী গণেশ হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর চালায়, বলে জানা যায়।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে ৭৫ লাখ হিন্দু বাস করে। তবে সম্প্রদায়ের মতে, দেশে ৯০ লাখের বেশি হিন্দু বসবাস করছেন। পাকিস্তানের হিন্দু জনসংখ্যার অধিকাংশই সিন্ধু প্রদেশে বসতি স্থাপন করে যেখানে তারা মুসলিম বাসিন্দাদের সাথে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ভাষা ভাগ করে নেয়। তারা প্রায়ই চরমপন্থীদের দ্বারা হয়রানির অভিযোগ করে।
ঘটনা হল সম্প্রতি পাকিস্তান ভারতের নবী বিতর্ক নিয়ে সোচ্চার হয়েছিল।পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ভারতের বিরুদ্ধে এই নবী কীর্তি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ রবিবার নবী মহম্মদের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতার মন্তব্যের নিন্দা করেন এবং বলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতাকে পায়ের তলায় পিষে মারছে। ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার মুসলমানদের উপর নিপীড়ন করছে বলে অভিযোগ করেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শরীফ টুইট করেছেন, "আমাদের প্রিয় নবী সম্পর্কে ভারতের বিজেপি নেতার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
বর্তমান ভারত সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বিশেষত মুসলমানদের অধিকারকে পায়ের তলায় পিষে মারছে। সারা বিশ্বের এটা দেখা উচিত এবং ভারতকে তিরস্কার করা উচিত।"
তিনি আরেকটি টুইটে বলেন, "নবীর এর প্রতি আমাদের প্রচুর শ্রদ্ধা রয়েছে । সকল মুসলমান তাদের নবী এর ভালোবাসা ও সম্মানের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করতে পারে।" পাকিস্তানের বিদেশ দফতরও এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে রিটুইট করেছে। পাকিস্তানের এই কথার জবাবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক পাল্টা দিয়ে বলেছিল যে যারা নিজেরাই প্রত্যেক দিন তাঁদের দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করছে তাঁরা আবার এই ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করছে। পাকিস্তানের উচিৎ আগে নিজের সমস্যা সামালানো।