বারাণসীতে সিরিয়াল বিস্ফোরণ ঘটানোয় গত শনিবার দোষী সাব্যস্ত হয় ওয়ালিউল্লাহ খান। এবার এই জঙ্গির সাজা ঘোষণা করল গাজিয়াবাদের জেলা ও দায়রা আদালত। মৃত্যুদণ্ড ও আজীবন কারাবাসের নির্দেশ। ওই বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১৮ জন, আহত হন শতাধিক।
২০০৬ সালের ৭ মার্চ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল বারাণসী। জোড়া বিস্ফোরণের প্রথমটি হয় বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই সঙ্কটমোচন মন্দিরে, সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ। ১৫ মিনিট পরে ফের বিস্ফোরণ, এবার বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে। আরেকটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়েছিল। এরপর প্রয়াগরাজ থেকে পুলিশের জালে ধরা পড়ে বিস্ফোরণের মূল চক্রী ওয়ালিউল্লাহ। সেটা ছিল ৫ এপ্রিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর অস্ত্র ও বিস্ফোরক। বারাণসীর আইনজীবীরা আদালতে ওয়ালিউল্লাহর জন্য লড়তে রাজি হননি। ৩ মে ওয়ালিউল্লাহকে আদালতে তোলার সময় কয়েকজন আইনজীবী আক্রমণ করেন। এরপর মামলাটি সরেছিল গাজিয়াবাদে। একটি মামলায় ১০ বছরের কারাবাস ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হয় ওয়ালিউল্লাহর।
বিস্ফোরণের মূল চক্রী ওয়ালিউল্লাহর বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা, স্বেচ্ছায় বিপজ্জনক অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করা-সহ বিভিন্ন অভিযোগে এক্সপ্লোসিভস অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারা অনুসারে মামলা রুজু করা হয়েছিল। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপর এক অভিযুক্ত পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারায়। জানা গিয়েছে, ওয়ালিউল্লাহর বাড়ি প্রয়াগরাজে ফুলপুরে। নিজের বাড়িতে জঙ্গিদের আশ্রয়ও দিয়েছিল সে।
গাজিয়াবাদের জেলা দায়রা আদালতের বিচারক জিতেন্দ্র কুমার সিনহা ওয়ালিউল্লাহকে প্রথম দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এতে ফাঁসির সাজার পাশাপাশি আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় একটি মামলায় ওয়ালিউল্লাহ খালাস পেয়েছে। তার ২.৬৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও ধার্য হয়েছে। বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে ওয়ালিউল্লাহকে ৪ মার্চ বারাণসীতে দেখেছিলেন তারকেশ্বর নাথ ও কিষাণ সোনকর। ঘটনাস্থলে ওয়ালিউল্লাহকে বিস্ফোরণের দিন একটি ব্যাগ হাতে দেখেছিলেন সীতারাম ও মোহন। যেখানে বিস্ফোরণগুলি ঘটে সেখানে ওয়ালিউল্লাহ বিস্ফোরণের ঘণ্টা দেড়েক আগে হাজির ছিল। টিভি চ্যানেলগুলিতে সন্দেহভাজন জঙ্গির ছবি প্রকাশ পেতেই তাকে চিনে ফেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা।