প্রায় দু'বছর করোনার কারনে চারধাম যাত্রায় তীর্থযাত্রীদের ভিড় ছিল অপেক্ষাকৃত কম! কিন্তু এই বছর কেদারবন্দ্রী দর্শনে কার্যত বাঁধ ভাঙা ভিড়। এই তীর্থ যাত্রায় বহু মানুষের মৃত্যুর খবর আগেই সামনে এসেছে। এবার জানা গেল যে গাধার পিঠে চেপে তীর্থযাত্রীরা উপরে তাঁদেরও মৃত্যুর হার ক্রমশ বাড়ছে।
মাত্র ২০ দিনে ৬০ গাধার মৃত্যু হয়েছে কেদার, বন্দ্রীনাথ গঙ্গোত্রী এবং জমুনেত্রী দর্শনের পথে।
জানা যাচ্ছে, কাজের ভার এত বাড়ছে ওই প্রাণীদের পক্ষে তা সহ্য করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনিতেই চড়াই পথে তীর্থযাত্রীদের পিঠে চাপিয়ে হাঁটতে হয় কিলোমিটারের পর কিলোমিটার। আর এই বছর সেই তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা এতটাই বেড়েছে গাধাদের বিশ্রামটুকু নেওয়ার সময় জুটছে না! তাঁদের মালিকেরাও গত দুবছরের অভাব এই বছরই পুষিয়ে নিতে চাইছে। তাই এক একটি গাধাকে খাটানো হচ্ছে আগের থেকে অনেক বেশি।
খাটতে না চাইলে জুটছে মারধরও। এমনকি তাঁদের শক্তি বাড়তে বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে বলেও সূত্রের খবর। আর এই খবর সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। মন্ত্রকের মন্ত্রী সৌরভ বহুগুণা গাধাদের মালিকদের নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। গাধাদের বেশি না খাটানোর জন্য কেন্দ্রের তরফে সতর্ক করা হলেও আদৌতে তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং তীর্থযাত্রীরা জানাচ্ছেন, গাধাদের অমানবিক ভাবে মারধর করা হচ্ছে। এমনকি তাঁরা কাজ যাতে বন্ধ না করে সেজন্যে ড্রাগ দেওয়া হচ্ছে বলেও এক সর্বভারতীয় এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যা ভয়াবহ বলছেন পশু সংগঠনগুলি।
তবে আগেই নিয়ম করে দেওয়া হয়েছিল একটি গাধা একবারই যাত্রী নিয়ে পাহাড়ে উঠবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। ২০১৩ সালের সেই ভয়ঙ্কর বন্যা আগে যে পথে কেদারনাথ যেতে হত সেই পথে গাধাদের শারীরিক অবস্থা দেখার জন্যে চারটি পয়েন্ট ছিল। কিন্তু নতুন রুটে একটিও পয়েন্ট নেই। যদিও এই খবর সামনে আসার পরেই একেবারে প্রশাসনের সর্বস্তর নড়েচড়ে বসেছে।
রুন্দ্রপ্রয়াগ চিফ ভেটেনারি অফিসের তরফে ওই সমস্ত প্রানিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই অফিসের তরফে এহেন অবস্থার কথা স্বীকারও করে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, সত্যিই গাধাদের দিয়ে অতিরিক্ত খাটানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অ্যানিমেল ওয়েলফের বোর্ডের তরফে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এমনকি গাধাদের রোগ নিয়েও চিন্তিত তাঁরা। দাবি, গ্ল্যান্ডার্স নামে একটি রোগ গাধাদের থেকে মানুষের মধ্যে ছড়য়ে পড়তে পারে। ফলে অবিলম্বে গাধাদের আইসোলেশন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে এই বোর্ড।