বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে পরিকল্পনা
গত বছর যখন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালটি হয়েছিল তখনও করোনা অতিমারীর জেরে বিধিনিষেধ জারি ছিল ইংল্যান্ডে। করোনার ধাক্কায় বিশ্ব ক্রিকেট থমকে যাওয়ার আগে সাউদাম্পটনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ক্রিকেটারদের রেখে নিরাপদে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল আয়োজনের সর্বোত্তম জায়গা সাউদাম্পটনের এজিয়াস বৌল। সেখানে মাঠের ধারেই রয়েছে টিম হোটেল। হোটেল থেকে পায়ে হেঁটেই অনুশীলন এ ম্যাচ খেলতে সক্ষম হয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। ভারতকে হারিয়ে প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব জেতে নিউজিল্যান্ড।
লর্ডসেই ফাইনাল
তবে এখন চেনা ছন্দে ফিরছে ইংল্যান্ড। বিধিনিষেধের কড়াকড়ি নেই। ফলে আইসিসিও আশাবাদী, আগামী বছর ফাইনালটি লর্ডসেই আয়োজন করা যাবে। লর্ডসে এখন চলছে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড প্রথম টেস্ট। বিবিসির এক অনুষ্ঠানে আইসিসির চেয়ারম্যান (ICC Chair) গ্রেগ বার্কলে বলেন, লর্ডসেই এই ফাইনাল হোক, সব সময়ই সেটা আমরা চেয়ে এসেছি। জুন মাসে ফাইনাল হবে। ফলে আমরা কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছি কোথায় সেই ম্যাচটি হবে। করোনা পরিস্থিতিও আমরা কাটিয়ে উঠেছি। সবরকম ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে বলে জানান বার্কলে। পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটের আইসিসি ইভেন্ট প্রতি বছরই থাকায় এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের সংখ্যা ও ব্য়াপ্তি বাড়তে থাকায় কমছে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সংখ্যা। এমনকী আগামী দিনে এফটিপি তৈরিও চ্যালেঞ্জিং হবে বলে ধারণা বার্কলের।
কমবে টেস্টের সংখ্যা
ইংল্যান্ডে জুলাই মাসে ভারত একটি টেস্ট খেলবে। দেশের মাটিতে অ্যাশেজ আয়োজনের আগে ইংল্যান্ড আরও একটি টেস্ট খেলবে, তবে সেটির প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত হয়নি। আর তাতেই লর্ডসই ফাইনাল আয়োজনের দৌড়ে এগিয়ে। বার্কলেকে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে টেস্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি মনে করেন, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেস্টের গুরুত্বকে বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া বাদে বাকি দেশগুলির টেস্ট খেলার সংখ্যা কমবে। এর অন্যতম কারণ আর্থিক বিষয়। অন্য ফরম্যাটগুলিই টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে। কেন না, টেস্ট সিরিজ অনেক বোর্ডকেই আর্থিকভাবে লাভবান করার পক্ষে যথেষ্ট নয়। তাই সেই দেশগুলিকে বছরে চারটি বা পাঁচটি টেস্ট খেলতে হবে।
সাদা বলের ক্রিকেটই বাঁচাবে টেস্টকে
বার্কলে মহিলাদের টেস্ট পাঁচদিন করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। একইসঙ্গে বলেছেন, এটা মানতে কোনও দ্বিধা নেই সাদা বলের ক্রিকেট, সীমিত ওভারের ক্রিকেটই ভবিষ্যৎ। এতে যেমন বেশি আগ্রহ দেখা যায় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে, তেমনই সম্প্রচারকারী সংস্থাও আর্থিকভাবে লাভবান হতে সাদা বলের ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিচ্ছে। সেখানে বিপুল আর্থিক হাতছানিও রয়েছে। তা সত্ত্বেও টেস্ট ঐতিহ্য, গরিমা নিয়েই বিরাজমান থাকবে বলে আশাবাদী বার্কলে। আর সেক্ষেত্রে বিগ থ্রি- ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ভূমিকা থাকবে বলে মনে করেন তিনি।