২০২২-এ মাধ্যমিক পাস করলেন ব্রাত্য বসু! স্থান অর্জন করে নিলেন মেধা তালিকাতেও। মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরই জল্পনা শুরু হয়ে যায়। তিনি এক থেকে ১০ নম্বর স্থান পর্যন্ত ১১৪ জনের নাম প্রকাশ করেন। সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ব্রাত্য বসুর নাম। জল্পনা শুরু হয় ওই নাম নিয়েই।
ওই নাম যে আর কারও নয়, রাজ্যের খোদ শিক্ষামন্ত্রীর! ব্রাত্য বসু ২০২২-এ মাধ্যমিক পাস করলেন। আবার স্থান করে নিলেন মেধা তালিকাতেও। এই নাম ঘোষণার সময় একটু হেসেও ফেলেন পর্যদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। শুরু হয়ে যায় ফিসফাস। তবে কি ভুল করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নাম মেধা তালিকায় ঢুকে পড়েছে!
ভুল ভাঙল অচিরেই। জানা গেল, কোনও ভুল নয়। এই ব্রাত্য বসু আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নন। এই ব্রাত্য বসু আসলে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ছাত্র। এবার ৬৮৬ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকারী করেছে ব্রাত্য। আমাদের শিক্ষামন্ত্রী নামেই তার নাম এবং পদবিও একই। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল সামান্য। তবে বিভ্রান্তি বলা ভুল, খানিক রসিকতা লুকিয়ে ছিল মাধ্যমিকের ফল ঘোষণায়। পর্ষদ সভাপতি মুচকি হেসে রসিকতা করেন। আর ব্রাত্য বসুর নাম শুনে সাংবাদিকরা ফিসফাস করে ওঠেন।
সম্র্নতি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যে সরগরম পরিস্থিতি। সেই নিয়োগ তালিকায় নানা দুর্নীতি রয়েছে। আর মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় তেমন কোনও ভুলভ্রান্ত হল কি না, তা নিয়ে রহস্য করেন অনেকে। তবে তা নিছকই জল্পনা। প্রথম দশের মেধা তালিকায় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ছাত্র ব্রাত্য বসুর স্থান পাওয়া নিয়ে মজা করেন সবাই।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাশের হারে এগিয়ে ফের পূর্ব মেদিনীপুর
শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করে মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এবার পূর্ব মেদিনীপুরে সাফল্যের হারে সবথেকে এগিয়ে। এই জেলায় সাফল্যের হার ৯৭.৬৩ শতাংশ। তারপর রয়েছে কালিম্পং ও পশ্চিম মেদিনীপুর। এবার মাধ্যমিকের ফল ৭৮ দিনের মাথায় প্রকাশ হল। ১৬ মার্চ পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। পরীক্ষার ফল প্রকাশ হল ৩ জুন।
করোনার কারণে ২০২১-এর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। এবার করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয় অফ লাইনে। কলকাতাকে টেক্কা দিয়ে মাধ্যমিকে জেলার জয়জয়কার আবারও। মেধা তালিকাতেও সবার উপরে জেলা। ৬৯৩ পেয়ে ছাত্রদের মধ্যে প্রথম বাঁকুড়ার অর্ণব ঘোড়াই ও পূর্ব বর্ধমানের রৌণক মণ্ডল। ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম মালদহ আদর্শবাণী বিদ্যাপীঠের কৌশিকী সরকার। সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয়। তিনি পেয়েছেন ৬৯২ নম্বর।
৬৯২ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন দুজন। ৬৯১ পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন দুজন। ৬৯০ পেয়ে চতুর্থ স্থানে চার জন। ৬৮৯ পেয়ে পঞ্চম ১১ জন। ৬৮৮ পেয়ে ৬ নম্বরে ৬ জন। ৬৮৭ পেয়ে ৭ নম্বরে ১০ জন। ৬৮৬ পেয়ে ৮ম স্থানে ২২ জন। ৬৮৫ পেয়ে নবম ১৫ জন। ৬৮৪ পেয়ে ১০ম ৪০ জন। ১ থেকে ১০-এ মোট ১১৪ জন।
বিষ্ণুপুর হাই স্কুল থেকে ৬৮৬ নম্বর পেয়ে এবার রাজ্যে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের ব্রাত্য বসু। বাবা চণ্ডীদাস বসু অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মী। এই সাফল্যে স্কুল ও গৃহশিক্ষকদের পাশাপাশি বাবা, মা, কাকা ও বড় মামার যথেষ্ট অবদান রয়েছে বলে সে জানায়। পড়াশুনার পাশাপাশি ভালো লাগে খেলাধুলাও। আগামী দিনে সে ডাক্তার হতে চায় বলে জানিয়েছে।