ম্যাগি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, তা নিয়ে এক সময় অনেক বিতর্ক হয়েছে। সেই বিতর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছে নেস্টলে। কিন্তু এবার নতুন বিতর্কে অন্যতম সেরা এই ফাস্ট ফুড। ম্যাগি নাকি বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে দিচ্ছে! না , কোনও গল্প কথা নয়। এমন এক বিবাহবিচ্ছেদের মামালা দায়ের হয়েছে যার কেন্দ্রে রয়েছে ম্যাগি।
ম্যাগি কি স্বামী - স্ত্রী'য়ের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে ? এই প্রশ্ন যদি করেন তাহলে উত্তর খুব সহজ। না। ম্যাগির মধ্যে এমন কোনও মন্ত্র নেই যা স্বামী - স্ত্রী'য়ের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে। তবে এমন ঘটনা ঘটল কী করে ? জানা গিয়েছে একজন ব্যক্তিকে তার স্ত্রী অহরাত্র ম্যাগি খাইয়ে যেতেন। ব্রেকফাস্ট ? ম্যাগি। লাঞ্চ ? ম্যাগি , অফিসে টিফিন ? ম্যাগি, অফিস থেকে ফিরে মুখে কিছু দেবেন ? এসে গেল ম্যাগি, ডিনার ? পাতে স্ত্রী সার্ভ করলেন গরম গরম ম্যাগি। ঘটনা অনেকটা এমনই এতেই তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। আর করে দিয়েছেন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা।
প্রিন্সিপাল জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এমএল রঘুনাথ, বৈবাহিক মামলার কথা বলতে গিয়ে যেখানে দম্পতিরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করে, তিনি বলেন যে এই মামলাটি এসেছিল যখন তিনি বাল্লারিতে জেলা বিচারক ছিলেন। তিনি বলেন, "স্বামী বলছে, তাঁর স্ত্রী ম্যাগি নুডলস ছাড়া অন্য কোনো খাবার তৈরি করতে জানেন না। সকালের, দুপুর এবং রাত। খাবারের মানেই ম্যাগি নুডুলস। তিনি অভিযোগ করেন যে তার স্ত্রী দোকানে গিয়ে শুধু নুডলস কিনে নিয়ে আসতেন। আর সেটাই তাঁকে দিনভর খাইয়ে যেতেন।"
রঘুনাথ এর নাম দিয়েছেন 'ম্যাগি কেস'। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত পারস্পরিক সম্মতিতে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদও হয়। বিচারক যোগ করেছেন যে বৈবাহিক বিরোধ নিষ্পত্তি করা কঠিন, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুনর্মিলন ঘটে কারণ দম্পতিরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে সেটা আর করেন না।
তিনি বলেছিলেন, "আমরা দম্পতিদের মধ্যে একটি সমঝোতা আনতে এবং তাদের পুনর্মিলন করার জন্য চেষ্টা করি। এটি শারীরিক থেকে মানসিক সমস্যা বেশি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, দম্পতিরা পুনর্মিলন করলেও, তাদের বিবাদের দাগ থেকে যায়। ৮০০-৯০০টি বিবাহ সংক্রান্ত মামলার মধ্যে, আমরা প্রায় ২০-৩০টি ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি সফল হই। আগের লোক আদালতে, প্রায় ১১০ টি বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, মাত্র ৩২টি ক্ষেত্রে পুনর্মিলন হয়েছিল," ।
তিনি যোগ করেন, "বিগত বছর ধরে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা মারাত্মকভাবে বাড়ছে। বিবাহবিচ্ছেদের আগে দম্পতিদের কমপক্ষে এক বছর একসঙ্গে থাকতে হবে। যদি এই ধরনের কোন আইন না থাকত, তাহলে বিবাহের অনুষ্ঠান থেকে সরাসরি বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করা যেত," ।
তিনি বলেছেন যে আদালত অনেক উদ্ভট কারণে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হয়। সঙ্গীর সাথে কথা না বলার জন্য, প্লেটের ভুল দিকে নুন দেওয়ার জন্য, ভুল রঙের বিবাহের স্যুট সেলাই করার জন্য, স্ত্রীকে বাইরে ঘুরতে না নিয়ে যাওয়ার জন্যর মতো ঘটনাও রয়েছে।
বিচারক বলেন, "আমরা গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চল থেকে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন বেশি পাই। গ্রামীণ এলাকায়, গ্রাম পঞ্চায়েত হস্তক্ষেপ করে এবং সমস্যার সমাধান করে। ওখানে নারীদের কোন স্বাধীনতা নেই এবং তাদের সমাজ ও পারিবারিক দিক ভেবে ভয়ে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হয়। তবে শহরে তো মহিলারা শিক্ষিত এবং আর্থিকভাবে স্বাধীন, তাই অনেক কারণে বিবাহবিচ্ছেদ হয়।"